দীর্ঘ ১৮ মাস আমি চোখের পানি ফেলেছি, এখন আর চোখের পানি ফেলবো না। ১৮ মাস আমি বিভিন্ন জনের দরজায় দরজায় ঘুরেছি। আমি আওয়ামী লীগের একজন কর্মী হিসেবে দলের কেন্দ্রীয় প্রত্যেক নেতার অফিসে অফিসে, ঘরের দরজায় গিয়েছি। কিন্তু কেউ আমাকে সুযোগ দেননি। আমার সত্য তথ্যটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করতে দেয়া হয়নি।
এভাবেই নিজের আক্ষেপ প্রকাশ করেন আওয়ামী লীগ থেকে স্থায়ী বহিষ্কার হওয়া গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম।
গাজীপুর মহানগরের ছয়দানা এলাকায় নিজ বাসভবনে মঙ্গলবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।
এ সময় জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমি আওয়ামী লীগের একজন সমর্থক। সমর্থককে বহিষ্কার করতে আপনাদের কেন্দ্রীয় কমিটি কেন লাগবে? আমি আবেদন করব, সমর্থক হিসেবে থাকার জন্য আমাকে দলে জায়গা করে দেন। ক্ষমতা ও পদের জন্য নয়; আমার বিরুদ্ধে যে অবিচার করা হয়েছে, সেই সত্যটা প্রতিষ্ঠিত করার জন্য আমার মায়ের সঙ্গে আছি।
আজকে গাজীপুরে লাখ লাখ মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। আমার কোনো পদ নেই, তারপরও লাখ লাখ মানুষ আমার সঙ্গে রয়েছে।
কেন্দ্রীয় নেতাদের উদ্দেশে জাহাঙ্গীর বলেন, আপনারা দাওয়াত খেয়ে যান, কিন্তু গাজীপুরের মানুষকে থ্রেট (হুমকি) দিয়েন না। আপানারা নেতা, আমরা কর্মী। কোনো সংস্থা দিয়ে, পেশীশক্তি দিয়ে আপনারা কর্মীর বাসায় দিন-রাত যাচ্ছেন, থ্রেট দিচ্ছেন, মোবাইলে কল করছেন। এটাকে ভোটের পরিবেশ বলে না।
এ সময় নিজের মাকে সংগ্রামী নারী উল্লেখ করে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমার মা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন। জন্মের পর থেকেই আমাকে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ করার জন্য যে শিক্ষা দিয়েছেন, তা নিয়ে আমি গাজীপুরে আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করেছি। ছাত্রজীবন থেকে সংগঠনের আদর্শ ও নিয়ম-নীতির বাইরে কখনও চলিনি। ছয় বছর গাজীপুর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছি। আমাকে ২০১৮ সালে নৌকা দিয়েছে। সেই নৌকা নিয়ে সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হয়েছি।
তিন বছর মেয়রের দায়িত্ব পালনের পর গাজীপুরের কোনও মানুষ আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেননি; করেছে শুধু একজন। সব নেতৃবৃন্দ বলেছে, তুমি কোনো অন্যায় করনি; আমরা বলবো, সমাধান হয়ে যাবে। দুঃখের বিষয়, প্রধানমন্ত্রীর কাছে কেউ সঠিক খবরটি পৌঁছায়নি।
তিনি বলেন, মেয়র থাকা অবস্থায় আমি যেসব কাজ করেছি সব সরকারি নিয়ম মেনেই করেছি। তারপরও আমার মেয়র পদ বাতিল বা স্থগিত হয়ে গেলো। আমাকে আওয়ামী লীগ ও মেয়রের পদ থেকে বহিষ্কারের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ও দলের সাধারণ সম্পাদক- কেউ আমার কথা দুই মিনিট শোনেননি, তাদের কাছে আমার পৌঁছানোর কোনো পথ রাখা হয়নি।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আজমত উল্লাকে মনোনয়ন দিয়েছে। সে আমার ক্ষতি করায় জড়িত ছিল। সত্য জানায় আজকে আমার সকল পাওয়ার চলে গেছে, রাষ্ট্রীয় সকল পাওয়ার চলে গেছে। দলের সকলে পাশ থেকে চলে গেছে। এতকিছুর পরও আমরা মা-সন্তান দাঁড়িয়েছি। তারপরও কেন কর্মীর ওপর অত্যাচার করা হয়? এটা কার জন্য ভালো?
ইভিএম নিয়ে শঙ্কা আছে কি না- এমন প্রশ্নে জাহাঙ্গীর বলেন, ইভিএম ভালো না খারাপ, সেটা ২৫ মে (নির্বাচনের দিন) দেখতে পারবেন। তখন আপনারাই বলবেন, ভালো না খারাপ।
http://dlvr.it/Sp777n
0 Comments