বাংলাদেশ কোনো দেশের লেজুড় নয় এবং চীনের দিকে কখনও ঝুঁকেও পড়েনি। কারণ ঢাকা একটি ভারসাম্যপূর্ণ ও স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি বজায় রেখে চলে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন শনিবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করেন।
ডিপ্লোম্যাটিক রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (ডিক্যাব) সদস্যদের সঙ্গে এই মতবিনিময়কালে তিনি বলেন, কিছু লোক মনে করে আমরা চীনের দিকে ঝুঁকছি। কিন্তু (আসলে) আমরা কারও দিকে ঝুঁকছি না। আমরা কারও লেজুড় নই..., আমরা চীনেরও লেজুড় নই।
মোমেন বেইজিংকে উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে অভিহিত করেন। একইসঙ্গে তিনি চীনা ঋণের ফাঁদে পড়ার কোনো ধরনের আশঙ্কাও নাকচ করে দেন। তিনি বলেন, এটি একটি ভুল ধারণা। কোনো কোনো পণ্ডিত এমন কথা বলেন। অনেকে এটা বিশ্বাস করে, বিশেষ করে কিছু বিদেশি প্রতিষ্ঠান।
কোনো অবস্থাতেই আমরা চীনা ঋণের ফাঁদে পড়ব না। বিদেশি ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে আমরা খুবই বিচক্ষণ ও সতর্ক। আমরা অপ্রয়োজনীয় ঋণ নেই না।
মোমেন বলেন, জনকল্যাণের মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ অব্যাহতভাবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক বৈদেশিক নীতি সকলের প্রতি বন্ধুত্ব, কারও প্রতি বিদ্বেষ নয় অনুসরণ করে চলেছে।
প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে ঢাকার সম্পর্ক সুদৃঢ় এবং আমরা ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি সোনালী অধ্যায়ে রয়েছি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্কও ভালো এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মতে, ওয়াশিংটন বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন করতে চায়।
সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতারসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখছে ঢাকা। সব দেশের সঙ্গে আমাদের ভালো সম্পর্ক রয়েছে। সেজন্য জাতিসংঘে যে কোনো নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে আমরা জয়ী হই।
আইএমএফের মতে, একটি দেশ ঋণের ফাঁদে পড়ার ঝুঁকির সম্মুখীন হতে পারে যদি এর মোট বৈদেশিক ঋণের ৫৫ শতাংশের বেশি একটি একক উৎস বা দেশ থেকে আসে।
মোমেন বলেন, তবে বাংলাদেশের জিডিপিতে বৈদেশিক ঋণের অংশ মাত্র ১৩ দশমিক ৭৮ শতাংশ; যার মধ্যে ৬১ শতাংশ এডিবি, আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো সরবরাহ করেছে। আর জাপান ১৭ শতাংশ নিয়ে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ একক দেশের ঋণ প্রদানকারী হয়ে উঠেছে।
চীন থেকে বাংলাদেশ ৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ নিয়েছে, যা মোট জিডিপির দশমিক ৭৫ শতাংশ।
ডিক্যাব সভাপতি রেজাউল করিম লোটাস অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।
http://dlvr.it/SrtFc8
0 Comments