Ticker

6/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

Responsive Advertisement

সাদিক এগ্রোর পুরো খামার গুঁড়িয়ে দিল ডিএনসিসি

ছাগল-কাণ্ডে আলোচনায় আসা সাদিক এ্রগ্রো খামার করতে প্রয়োজনীয় কোনো অনুমোদনই নেয়া হয়নি। এর পরিপ্রেক্ষিতে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের সাতমসজিদ হাউজিংয়ে খালের জায়গা দখল করে গড়ে তোলা খামারের পুরোটাই গুঁড়িয়ে দিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)।
শনিবার তৃতীয় দিনের মতো অভিযান চালিয়ে খামারটি পুরোপরি ভেঙে দেয় ডিএনসিসি পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত।
ডিএনসিসির অঞ্চল-৫ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতাকাব্বীর আহমেদ এবং ডিএনসিসির সম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব হাসান এই অভিযানে নেতৃত্ব দেন।
অভিযানকালে ডিএনসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহে আলম ও স্থানীয় কাউন্সিলর আসিফ আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
অভিযান-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, সাদিক এগ্রোর খামারটি ছিল একেবারে রামচন্দ্রপুর খালের পাড় ঘেঁষে। খালের প্লাবন ভূমির ৩০ ফুটের মধ্যে কোনো স্থাপনা নির্মাণ না করতে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা রয়েছে।
এছাড়া স্থাপনা নির্মাণের জন্য সাদিক এগ্রোর রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) কোনো অনুমতিও ছিল না। খামারের জন্য সিটি করপোরেশন থেকে ট্রেড লাইসেন্সও নেয়া হয়নি।
মোতাকাব্বীর আহমেদ বলেন, বৃহস্পতিবার আংশিক ভেঙে দিয়ে তাদের (সাদিক এগ্রো) ট্রেড লাইসেন্স, ফার্মের স্থাপনা নির্মাণের অনুমতিপত্র চাওয়া হয়েছিল। তারা সেদিন এসবের কিছুই দিতে পারেনি।
সেদিন তারা নিজেরাই ভেঙে দেবে বলে দুদিন সময় নিয়েছিল। আজ গিয়ে দেখা যায় ভাঙেনি। তাই বাকিটাও ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
খাল ও খালের পাড় দখল করে সাদিক এগ্রো ও কয়েক ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন।
শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় উচ্ছেদ অভিযান শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বৃষ্টির কারণে তা বিলম্বিত হয়। পরে দুপুর ১২টায় বৃষ্টি থামলে উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হয়।
সাদিক অ্যাগ্রো ছাড়াও তিনদিনের অভিযানে প্রায় ৭০টি স্থাপনা গুড়িয়ে দিয়ে এখন পর্যন্ত ২০ বিঘা জমি উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া রামচন্দ্রপুর খালের ১০ টন বর্জ্য পরিষ্কার করে খনন কাজ চালানো হয়।
তৃতীয় দিনের অভিযানে সাদিক অ্যাগ্রোর খামারটি ছাড়াও আরও ৯টি অবৈধ পাকা স্থাপনা, একটি হাউজিংয়ের ফটক ও আশপাশের কিছু ছোট স্থাপনা ভেঙে ফেলা হয়।
ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলামের নির্দেশনায় বিভিন্ন খালের জায়গা উদ্ধারে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে ডিএনসিসি। তারই অংশ হিসেবে এই অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।
তিনদিনের অভিযানে প্রায় ৭০টি স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিয়ে এখন পর্যন্ত ২০ বিঘা জমি উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া রামচন্দ্রপুর খালের ১০ টন বর্জ্য পরিষ্কার করে খনন কাজ চালানো হয়।
প্রসঙ্গত, ঈদুল আজহার আগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য মতিউর রহমানের ছেলে মুশফিকুর রহমান ইফাত ১৫ লাখ টাকায় একটি ছাগল কেনার ঘটনায় আলোচনায় আসেন মতিউর। অভিযোগ উঠতে শুরু করে, গুরুত্বপূর্ণ সরকারি পদে থেকে তিনি বিপুল সম্পদ অবৈধভাবে অর্জন করেছেন।
একইসঙ্গে এই ছাগলকাণ্ডে সাদিক এগ্রোকে নিয়েও গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ হতে থাকে। আলোচনায় আসে খালের অংশ দখলে নিয়ে খামার গড়ে তোলার বিষয়টিও।
এর আগে ২০২২ সালের ২৪ জানুয়ারি সাদিক অ্যাগ্রোর সাতমসজিদ হাউজিংয়ের খামার থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরত্বে বসিলায় অবৈধভাবে দখল হওয়া লাউতলা খাল দখলমুক্ত করতে অভিযান চালায় ডিএনসিসি। যেখানে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ট্রাক টার্মিনাল উচ্ছেদ করা হয় ডিএনসিসি মেয়রের নেতৃত্বে।
২৩ জানুয়ারি লাউতলা খালের কাছের আরও একটি অবৈধ দখল উচ্ছেদ করে ঢাকা উত্তর। তখন খাল দখল করে ১০তলা একটি নির্মাণাধীন ভবন ভেঙে ফেলা হয়। তবে অবৈধভাবে খাল দখল করে গড়ে তোলা সাদিক এগ্রো তখনও ছিল ধরাছোঁয়ার বাইরে।
ডিএনসিসির কর্মকর্তারা অবশ্য বলছেন, তারা এ বছর ঈদুল আজহার আগেই সাদিক এগ্রোকে নোটিশ পাঠিয়েছিলেন।
জানা যায়, সাতমসজিদ হাউজিংয়ে অবস্থিত খামারটির জমির মালিক জনৈক আব্দুল রশিদ তালুকদার। তবে এর তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে রয়েছেন তার ভাই আব্দুল আলীম। তার থেকে ২৫ হাজার টাকার বিনিময়ে পৌনে পাঁচ শতক জমি ভাড়া নেন সাদিক এগ্রোর মালিক ইমরান হোসেন। এরপর রামচন্দ্রপুর খালের আরও ১৫ শতাংশ জায়গা দখলে নিয়ে সেখানে গবাদিপশুর শেড তৈরি করেছিলেন তিনি।
সাদিক এগ্রোর মালিক ইমরান হোসেন বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিডিএফএ) সভাপতি। খামারের সঙ্গেই অ্যাসোসিয়েশনের কার্যালয় ছিল। অভিযানে সেটিও ভেঙে দেয়া হয়েছে।
ইমরান হোসেন বলেন, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। যখন খালগুলোর দায়িত্ব সিটি করপোরেশন পায়, তখন ভবন খালের বাইরে আছে এমনটাই জানিয়েছিল জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড। যদিও ভবন আমার না, আমি ভাড়াটিয়া।
তিনি বলেন, আমি এই জমিতে ভাড়ায় ছিলাম। তাই উচ্ছেদ অভিযানে আমার কিছু যায় আসে না। আমি অন্য জায়গায় চলে যাব। জায়গার মালিক শেড করেছেন, আমি নিচতলা ভাড়া নিয়েছি। খাল ভরাটসহ যা কিছু বলা হচ্ছে সবই মালিকের করা।


http://dlvr.it/T8xhRc

Post a Comment

0 Comments