সরকার পরিবর্তনের পর থেকে অস্থিরতা শুরু হয়েছে দেশের ব্যাংক খাতেও। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে শুরু করে সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকেও চলছে চরম অস্থিরতা।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অভিযোগ করা হচ্ছে, ব্যাংকগুলোর শীর্ষ কর্তারা নানা অনিয়ম আর দুর্নীতিতে জড়িয়ে ব্যাংকের সর্বনাশ করেছেন। এজন্য তাদের পদত্যাগ ও শাস্তি দাবি করেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
এবার সেই দাবিতে ঘি ঢেলেছে দেশের শীর্ষ গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-সিপিডি। প্রতিষ্ঠানটির হিসাবে বলা হয়েছে, গত ১৫ বছরে ব্যাংক খাত থেকে ৯২ হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়ে গেছে।
সোমবার ধানমণ্ডিতে সিপিডি কার্যালয়ে মিডিয়া ব্রিফিংয়ে প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বক্তব্য তুলে ধরেন। ছবি: সংগৃহীত
২০০৮ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত গত ১৫ বছরে দেশের ব্যাংক খাতে বড় বড় অন্তত ২৪টি আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটেছে। এর মাধ্যমে লোপাট হয়েছে ৯২ হাজার ২৬১ কোটি টাকা। এই অর্থ গত অর্থবছরের বাজেটের ১২ শতাংশ। অন্যদিকে এ সময়ে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৮২ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা।
সোমবার রাজধানীর ধানমণ্ডিতে সিপিডি কার্যালয়ে ব্যাংকিং খাতের সুশাসন ফিরিয়ে আনতে করণীয় শীর্ষক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন এ তথ্য তুলে ধরেন।
সিপিডির সম্মানীয় ফেলো প্রফেসর মোস্তাফিজুর রহমান ও গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, ব্যাংক খাতকে বাঁচাতে হলে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে শক্তিশালী করতে হবে, বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বাধীনতা সমুন্নত রাখতে হবে এবং সময়মতো তথ্যের সততা ও সহজলভ্যতা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি শীর্ষ কর্মকর্তাদের রাজনৈতিক প্রভাব থেকে বের হতে হবে।
সিপিডি ব্যাংক খাতের স্বচ্ছতা আনতে আবারও একটি সুনির্দিষ্ট, সময় উপযোগী, স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও স্বাধীন ব্যাংকিং কমিশন গঠনের সুপারিশ করেছে। তারা বলছে, এই সংস্কার অবশ্যই রাজনৈতিকভাবে হতে হবে। কারণ স্বার্থান্বেষী মহল এতে বাধা তৈরি করবে।
বেশ কয়েকটি ব্যাংকের অবস্থা সংকটজনক হলেও বেইলআউটের মাধ্যমে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে উল্লেখ করে সিপিডি বলেছে, ধসের দ্বারপ্রান্তে থাকা ব্যাংকগুলোকে বন্ধ করে দিতে হবে। তাদেরকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা ভালো ব্যাংকগুলোর ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
http://dlvr.it/TBpgQR
0 Comments