Ticker

6/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

Responsive Advertisement

প্রাণ-প্রকৃতিতে কাশফুলের মুগ্ধতা

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শরৎ কবিতায় লিখেছিলেন- আজি কি তোমার মধুর মূরতি হেরিনু শারদ প্রভাতে! কবিতার পংক্তিমালা মন ছুয়ে যায়! দিশেহারা হয়ে ছুটে যায় মন- কোথায় আছে এমন ধবল সাদা কাশবন? ঋতু পরিবর্তনের নিয়মে এসেছে শরৎ। তাই তো কাশফুল ফুটে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে প্রাণ-প্রকৃতিতে। নদীর ধার, পুকুর পাড় কিংবা বিস্তীর্ণ বালুচরে বড্ড অবহেলায় ফোটে কাশফুল। লাগে না কোনো যত্ন-আত্তি। প্রকৃতির এই দান দূর থেকে দেখে মনে হয়, শরতের আকাশের সাদা মেঘ যেন নেমে এসেছে ধরণীর বুকে। মৃদুমন্দ বাতাসে ওরা একে অপরের গায়ে লুটোপুটি খায়, নাচতে থাকে আপন ছন্দে। মুগ্ধ না হয়ে কি উপায় আছে! কাশফুলের ছন্দ অগোচরেই যেন দোলা দিয়ে যায় সব বয়সীদের হৃদয়ে। ইট-পাথরের যান্ত্রিক কোলাহল ছেড়ে ক্ষণিক প্রশান্তির খোঁজে মানুষ ছুটে আসে কাশফুলের সংস্পর্শ পেতে। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে চা গবেষণা কেন্দ্রের মোড় পেরিয়ে খানিকটা এগুলেই পথের ধারে মিলবে কাশবনের সমারোহ। সে যেন গাঢ় সবুজের মাঝে শুভ্র কাশফুলের চাদরে ঢাকা রূপসী বাংলার একখণ্ড ছবি। আঁকাবাঁকা পথের দুধারে সারি সারি চা বাগান কিংবা সন্ধ্যায় ঝলমলে আলোর মাঝে পর্যটকরা মনভরে উপভোগ করেন কাশফুলের অপার সৌন্দর্য। শ্রীমঙ্গলে চা গবেষণা কেন্দ্রের মোড় পেরিয়ে খানিকটা এগুলেই পথের ধারে কাশবনের সমারোহ। ছবি: নিউজবাংলা শুভ্র কাশবনে ছেয়ে আছে পাহাড়ি ছড়া, ঘন চা বাগান এলাকা। এঁকেবেঁকে বয়ে চলা পাহাড়ি ছড়ার দুই পাশ দিয়ে উঁচু-নিচু টিলা। ঋতুভেদে চা বাগানগুলোতেও প্রকৃতির রঙ বদলায়। সিলেট শহর থেকে আড়াই কিলোমিটার দূরে ভানুগাছ সড়কের পাশে বেলতলী সংলগ্ন ভুড়ভড়িয়া ছড়ার পাশে কাশফুলের বালুচরের অবস্থান। ভানুগাছে যাওয়ার রাস্তা ধরে সামনে এগুলেই চা বাগানের ছড়ার পাশে দেখা মিলবে কাশফুলের বালুচর। প্রতিবছর আগস্টের শেষের দিক থেকে অক্টোবরের প্রথম পর্যন্ত এই শুভ্র ফুল ফোটে। তাই বছরের দুই মাস এখানে পর্যটক ও স্থানীয় প্রকৃতিপ্রেমীদের ভিড় লেগেই থাকে। শীতে কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকে বাগানগুলো। চা বাগানসহ শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলা জুড়েই দিনে কিংবা রাতে পর্যটকরা মনভরে উপভোগ করেন কাশফুলের এই সৌন্দর্য। সরেজমিনে দেখা যায়, বিভিন্ন বয়সী লোকজন এসেছেন এখানে। কাউকে আবার দেখা যায় কাশফুলের মাঝে দাঁড়িয়ে বা বসে ছবি তুলতে। অনেকে আবার মুক্ত বাতাসে পুরো বালুচর ঘুরে বেড়িয়ে আনন্দ উপভোগ করছেন। স্থানীয়রা জানান, প্রতিবছর আগস্টের শুরু কিংবা শেষের দিকে কাশফুল ফুটতে শুরু করে। সেপ্টেম্বর মাসে এসে সাদা কাশফুলে ছেয়ে যায় পুরো দুই কিলোমিটার এলাকা। সেপ্টেম্বরের শেষে কিংবা অক্টোবরের প্রথম দিকে ফুলগুলো ঝরে যায়। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে এ কাশবনে মানুষের ভিড় লেগেই থাকে। কাশফুল দেখতে আশা দর্শনার্থী মনিরুল ইসলাম বলেন, ঋতু পরিক্রমায় বাংলার প্রকৃতিতে এখন শরৎকাল। রাশি রাশি কাশফুল ছড়াচ্ছে শ্বেত শুভ্র নৈসর্গিকতা। আর তা মুগ্ধ করছে প্রকৃতিপ্রেমীদের। কাশফুল ও চায়ের রাজ্য দেখতে আসা সিলেট মহিলা কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী অনাজিলা ধোহা বলেন, কলেজ বন্ধ থাকায় একটু সময় বের করে বের হয়েছি। তাই বলে একা নই, পরিবারের সদস্যরাও এসেছেন। জায়গাটি অনেক সুন্দর। কাশফুলের মুগ্ধতা থেকেই এখানে আসা। কাশফুলের সঙ্গে ছবি তুললে ছবিগুলোও অনেক সুন্দর হয়। তাই এখানে আসা। শ্রীমঙ্গল পর্যটন সেবা সংস্থার সাংগঠনিক সম্পাদক এস কে দাশ সুমন বলেন, চায়ের রাজধানী হিসেবে শ্রীমঙ্গলের খ্যাতি দেশ-বিদেশে। এখানে চা-বাগানের পাশাপাশি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা অনেক জায়গা আছে। চার-পাচঁ বছর ধরে কাশফুলের বালুচরটি সবার কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। শ্রীমঙ্গলে আসা পর্যটকরাও এখানে চলে আসেন প্রকৃতি দেখতে। কাশবন ও কাশফুলের সৌন্দর্য তাদেরকে বাড়তি বিনোদন দেয় নিঃসন্দেহে।
http://dlvr.it/Svtz2b

Post a Comment

0 Comments