রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (আরডিএ) সহকারী প্রকৌশলী শেখ কামরুজ্জামান এবং তার স্ত্রী নিশাত তামান্নাকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের করা দুটি মামলায় রোববার দুপুর ১২টার দিকে জামিন নিতে তারা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে যান। আদালত তাদের আবেদন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।
রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী বজলে তৌহিদ আল হাসান বাবলা বলেন, শেখ কামরুজ্জামান এবং তার স্ত্রী নিশাত তামান্না রোববার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে হাজির হয়ে দুটি মামলায় জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক আসাদ মো. আশিফুজ্জামান জামিন আবেদন নাকচ করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তাদের রাজশাহী কারাগারে পাঠানো হয়।
তিনি বলেন, গত ২৯ আগস্ট মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সমন্বিত রাজশাহী অঞ্চল কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন তদন্ত শেষে প্রকৌশলী শেখ কামরুজ্জামান ও তার স্ত্রী নিশাত তামান্নার বিরুদ্ধে আদালতে পৃথক দুটি দুর্নীতি মামলার চার্জশিট দাখিল করেন। দুদক গত বছরের ১ জুন শেখ কামরুজ্জামান ও ২ জুন তার স্ত্রী নিশাত তামান্নার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা দুটি করেছিল।
মামলার অভিযোগপত্রের (চার্জশিট) বিবরণ অনুযায়ী শেখ কামরুজ্জামান ২০০৫ সালে রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে যোগদান করেন। পরে তাকে এস্টেট অফিসার হিসেবে পদায়ন করা হয়। এই সময়ে সরকারি প্লট ও দোকানপাট বরাদ্দ এবং বিক্রিতে ব্যাপক দুর্নীতি করেন। এই দুর্নীতির মাধ্যমে তিনি বিপুল অবৈধ সম্পদের মালিক হন। স্ত্রী নিশাত তামান্নার নামেও গচ্ছিত করেন বিপুল সম্পদ ও নগদ টাকা।
এদিকে ২০১৭ সালে অভিযোগ পেয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন শেখ কামরুজ্জামানের অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান শুরু করে। দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর দুদক ২০২২ সালের ১ জুন প্রকৌশলী শেখ কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে ৭৬ লাখ ৫০ হাজার ৬৮৬ টাকার সমপরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে। মামলার তদন্ত শেষে গত ২৯ জুন শেখ কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেয়া হয়।
অভিযোগপত্রের বিবরণ অনুযায়ী, প্রকৌশলী শেখ কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে করা দুর্নীতি মামলা তদন্তকালে তার আরও অবৈধ সম্পদের খোঁজ পায় দুদক। অভিযোগপত্রে কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে সর্বমোট ১ কোটি ৬ লাখ ৬৯ হাজার ৯১১ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এই পরিমাণ সম্পদ তিনি অবৈধ উপায়ে অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন বলে অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে।
পৃথক দুর্নীতি মামলায় শেখ কামরুজ্জামানের স্ত্রী নিশাত তামান্নার বিরুদ্ধেও একই দিনে চার্জশিট প্রদান করা হয় আদালতে। মামলায় তার বিরুদ্ধে ৫৩ লাখ ১৩ হাজার ২১১ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হলেও তদন্তকালে তার আরও অবৈধ সম্পদের খোঁজ পায় দুদক। ফলে অভিযোগপত্রে নিশাত তামান্নার বিরুদ্ধে ৬০ লাখ ৬২ হাজার ১১৮ টাকা অবৈধভাবে অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপন করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
শেখ কামরুজ্জামানের বাড়ি কুষ্টিয়া জেলার বারখাদা গ্রামে। বর্তমানে রাজশাহী মহানগরীর পবা নতুনপাড়ায় বাড়ি করে বসবাস করেন। তামান্না রাজশাহী মহানগরীর শাহমখদুম থানার পবা নতুনপাড়া মহল্লার নূরুল ইসলামের মেয়ে। তিনি পবা নতুনপাড়ায় স্বামী প্রকৌশলী শেখ কামরুজ্জামানের বাড়িতে বসবাস করেন।
http://dlvr.it/SvvJD7
0 Comments