প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শিল্পীর আঁকা ছবি হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করা যায় আবার সঙ্গে সঙ্গে দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ হওয়া যায়। সেই চেতনায় আমাদের দেশের জনগণ জাগ্রত হবে এবং দেশকে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শেই ভবিষ্যতেও এগিয়ে নিয়ে যাবে, গড়ে তুলবে৷ আবার যেন কখনো আমাদের মুক্তিযুদ্ধের এই বিজয়গাথা কেউ বিকৃত করতে না পারে।
শুক্রবার জাতীয় জাদুঘরে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মিলনায়তনে এবং নলিনীকান্ত ভট্টশালী গ্যালারিতে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চিত্রশিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদের আঁকা শিল্পকর্ম নিয়ে শাহাবুদ্দিন: এ রেট্রোস্পেক্টিভ (১৯৭৩-২০২৩) শীর্ষক প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমেদ, বাংলাদেশের নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত মেরি মাসদুজুই, জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক কামরুজ্জামান।
উদ্বোধন ঘোষণা শেষে প্রধানমন্ত্রী প্রদর্শনীর বিভিন্ন গ্যালারি ঘুরে ঘুরে দেখেন। এর সময় তার ছোট বোন শেখ রেহানাও উপস্থিত ছিলেন। মাসব্যাপী এই প্রদর্শনীতে শিল্পীর ১৪০ টি শিল্প-কর্ম গ্যালারিতে প্রদর্শিত হবে।
শিল্পকর্ম প্রদর্শনীর প্রসঙ্গ তুলে ধরে শিল্পী শাহাবুদ্দিনের শৈল্পিক সত্তার প্রশংসা করে শেখ হাসিনা বলেন, সে একজন শিল্পীর সঙ্গে সঙ্গে একজন মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযোদ্ধার তুলির আঁচড়ে উঠে আসে মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস। অনেক গল্প অনেক কথা।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, তুলির আঁচড় থেকেই ফুটে ওঠে আমাদের প্রকৃতি। আমাদের দেশের মানচিত্র। যেমন-আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্যও ফুটে ওঠে সেই সঙ্গে দারিদ্র্য পীড়িত মানুষের জীবনগুলোও উঠে আসে।
শিল্পী শাহাবুদ্দিনের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন পর্যন্ত তার তুলির আঁচড় মুক্তিযুদ্ধ এবং সেই চেতনাই কিন্তু অনুভব করতে পারি। সে জন্য শাহাবুদ্দিনকে ধন্যবাদ। এখনো সেই অনুভূতিটা তার মধ্যে রয়ে গেছে মনে হয় যেন সে একজন মুক্তিযোদ্ধা, এখনই আবার যুদ্ধ করবে। তবে যুদ্ধ আমরা তো করে যাচ্ছি, এটা ঠিক। কারণ ১৯৭৫ এর ১৫ই আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যার পর স্বাধীনতার চেতনাকে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ সবই তো মুছে গিয়েছিল।
তিনি বলেন, আমাদের কবি শিল্পী সাহিত্যিক লেখক তারাই কিন্তু তাদের লেখনীর মধ্য দিয়ে এই চেতনাকে ধরে রেখেছিলেন বলেই আমরা রাজনীতিবিদরা রাজনীতির মধ্য দিয়ে আবার দেশে শুধু গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা না; গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছি, জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করেছি এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশকে গড়ে তোলার পদক্ষেপ নিয়েছি। আজকে আমাদের তরুণ সমাজের মধ্যে সেই চেতনা কিন্তু ফিরিয়ে ফিরে আসতে শুরু করেছে। এটাই হচ্ছে সব থেকে বড় পাওয়া বলে মনে করি।
তিনি আরও বলেন, দেশে দেশে বিভিন্ন জায়গায় সে গেছে। অনেক সম্মান পেয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশকেও সম্মানিত করেছে। তার সাফল্য কামনা করি। তার এই শিল্প-কর্ম একমাস ব্যাপী প্রদর্শনী হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি মনে করি মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযুদ্ধের বিজয় এটা আমাদের জাতীয় জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কাজেই আমি তার সাফল্য কামনা করি।
ধানমন্ডির ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর জাদুঘরে যে সিঁড়িতে জাতির পিতা শাহাদাত বরণ করেছিলেন সেই সিঁড়িতে শাহবুদ্দিনের শিল্পী শাহাবুদ্দিনের ছবি রাখা আছে বলেও অবহিত করেন শেখ হাসিনা।
http://dlvr.it/Sw8Qyd
0 Comments