Ticker

6/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

Responsive Advertisement

স্ত্রীর মরদেহ বাঁধে ফেলে যাওয়া সেই খোকন ট্রেনের নিচে

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে স্ত্রীর মরদেহ দাফন না করে নদীর বাঁধে ফেলে যাওয়া সেই স্বামী খোকন মিয়া ট্রেনে কাটা পড়ে নিহত হয়েছেন।
বুধবার রাত ৮টার দিকে নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন গাইবান্ধা রেলওয়ে পুলিশের ওসি সুমন পারভেজ।
ঘটনার পর খোকনের কোনো ওয়ারিশকে না পেয়ে বেওয়ারিশ লাশের দায়িত্ব নেয়া সংগঠন আঞ্জুমান মফিদুলের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করে রেলওয়ে পুলিশ। পরে দুপুরে বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে খোকনের মরদেহ গাইবান্ধা পৌর কবরস্থানে দাফন করে গাইবান্ধার আঞ্জুমান মফিদুল।
এর আগে মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) সকাল ১১টার দিকে বোনারপাড়ার ডিমলা পদুমশহর রেলসেতু-সংলগ্ন এলাকায় সান্তাহার-বুড়িমারীগামী করতোয়া এক্সপ্রেস ট্রেনে কাটা পড়ে তিনি নিহত হন।
নিহত খোকন গাইবান্ধা সদর উপজেলার হাটলক্ষ্মীপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে। তিনি সাদুল্লাপুর উপজেলার কামারপাড়া ইউনিয়নের হিয়ালী গ্রামে নানার বাড়িতে বসবাস করে আসছিলেন।
স্থানীয়দের বরাতে ওসি সুমন পারভেজ বলেন, ট্রেনে কাটা পড়ে নিহত হওয়ার খবর পেয়ে রেলওয়ে পুলিশ খোকনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ হস্তান্তর প্রক্রিয়া করতে গিয়ে তার কোনো স্বজনকে পাওয়া যায়নি।
এ সময় তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, তার এলাকার কেউই মরদেহের দায়িত্ব নিয়ে দাফন করতে রাজি হননি। পরে আমরা আঞ্জুমান মফিদুলের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করি।
খোকন মানসিক প্রতিবন্ধী জানিয়ে দূর্ঘটনাবশত তার মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন রেলওয়ে পুলিশের এ কর্মকর্তা।
আঞ্জুমান মফিদুলের গাইবান্ধার উপ-পরিচালক শাহজাহান খন্দকার মোবাইল ফোনে বলেন, বেলা ১২টার দিকে বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে তার মরদেহ আমরা গাইবান্ধা পৌর কবরস্থানে দাফন করি। ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু হয়েছিল বলে রেলওয়ে পুলিশ মারফত আমরা জেনেছি।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) সকালে সাদুল্লাপুর উপজেলার কামারপাড়া ইউনিয়নের খামার বাগছী এলাকার নদীর বাঁধ থেকে খোকনের স্ত্রী শারমিন খাতুনের মরদেহ উদ্ধার করে সাদুল্লাপুর থানা পুলিশ।
ওই সময় সাদুল্লাপুর থানার ওসি মাহবুব আলম স্থানীয়দের বরাতে নিউজবাংলাকে জানান, ২৩ বছর বয়সী শারমিন দীর্ঘদিন থেকে ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন। স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য খোকন মিয়া গ্রামে গ্রামে ভ্যানযোগে সাহায্য (টাকা) তুলে বেড়াতেন। যে অর্থ পেতেন তা দিয়ে স্ত্রীর চিকিৎসার পাশাপাশি তাদের সংসার চলত।
প্রতিদিনের মতো সেদিনও স্ত্রীকে নিয়ে বের হন তিনি। পরে উপজেলার ভাতগ্রাম ইউনিয়নের ভগবানপুর গ্রামে গেলে তার স্ত্রী মারা যায়। পরে ওই এলাকার লোকজন আর্থিক সহযোগিতা করে মরদেহ দাফনের জন্য খোকনকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু খোকন মিয়া স্ত্রীর মরদেহ দাফন না করে খামার বাগছী এলাকার বাঁধে ফেলে রেখে যান। পরেরদিন সকালে স্থানীয়রা মরদেহ দেখে পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়।


http://dlvr.it/SzTDz2

Post a Comment

0 Comments