জনপ্রতিনিধিত্বের অবস্থানকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অর্থ ও সম্পদ বৃদ্ধির লাইসেন্স হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে বলে মনে করছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
রোববার ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন-২০২৪-এর প্রার্থী ও বিজয়ীদের হলফনামার তথ্য বিশ্লেষণ ও পর্যবেক্ষণ প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।
তিনি বলেন, জনপ্রতিনিধিত্বের অবস্থানকে আনুষ্ঠানিক-আনুষ্ঠানিকভাবে, প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে ও বিভিন্ন যোগসাজসে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অর্থ ও সম্পদ বৃদ্ধির লাইসেন্স হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। ফলে দলীয় নির্দেশনা বা শৃঙ্খলা উপেক্ষা করে মুনাফাকেন্দ্রিক উদ্দেশ্য নিয়ে জনপ্রতিনিধিত্বের অবস্থান দখল করা হচ্ছে।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, যারা জনকল্যাণমুখী আদর্শ নিয়ে রাজনীতি করতে চাইছেন, এমন পরিস্থিতিতে তারা নিজেদের কোণঠাসা ভাবছেন। এ প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক অঙ্গনে ফ্রাঙ্কেনস্টাইন তৈরি হচ্ছে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, জনস্বার্থকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হওয়ার প্রত্যাশা থাকলেও বাস্তবে জনপ্রতিনিধিত্বের নামে ক্ষমতার অপব্যবহারকেন্দ্রিক অসুস্থ প্রতিযোগিতার বিকাশ ঘটছে।
তিনি বলেন, হলফনামার তথ্যের বিশ্লেষণ এই ক্ষমতাকেন্দ্রিক অসুস্থ প্রতিযোগিতার উৎকৃষ্ট প্রমাণ বহন করছে। ক্ষমতায় থাকলে সম্পদ বিকাশের অবারিত সুযোগ তৈরি হয় এবং কোনো জবাবদিহির মুখে পড়তে হয় না।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতা অপব্যবহারের সুযোগ এমন ব্যাপকভাবে তৈরি করে দিচ্ছে যে, তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে রাজনৈতিক নেতৃত্বকেই ভূমিকা রাখতে হবে।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো উপজেলা নির্বাচনেও প্রার্থীদের আইনবহির্ভূত জমির মালিকানা, অসামঞ্জস্যপূর্ণ আয় ও সম্পদের বৃদ্ধির চিত্র উঠে এসেছে বলে জানান টিআইবির নির্বাহী পরিচালক।
তিনি বলেন, হলফনামায় প্রদত্ত তথ্যের পর্যাপ্ততা নিয়েও প্রশ্নের অবকাশ রয়েছে। কারণ, আমরা দেখছি প্রায় ৮৪ শতাংশ প্রার্থীর হলফনামায় তথ্যের সঙ্গে আয়কর বিবরণীর তথ্যের অসামঞ্জস্যতা রয়েছে। এই অসামঞ্জস্যগুলো, বিশেষ করে আয় ও সম্পদের বিকাশ বৈধ আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না, তা খতিয়ে দেখার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশন, দুদক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মতো সংস্থার।
http://dlvr.it/T82ngy
0 Comments