বরিশাল মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি ও সরকারী সৈয়দ হাতেম কলেজ ছাত্রদলের সদস্য সচিবকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
বুধবার র্যাব-৮ সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে মঙ্গলবার মধ্যরাতে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে র্যাব জানিয়েছে।
গ্রেপ্তাররা হলেন বরিশাল মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি ৩৬ বছর বয়সী এ্যাড. রেজাউল করিম রনি ও সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ ছাত্রদলের সদস্য সচিব ২৭ বছর বয়সী আহাদ হোসেন আবির।
ছাত্রদল নেতা রনির মা রাশিদা জাহান মায়া জানান, মঙ্গলবার গভীর রাতে নগরীর দপ্তরখানা রোড থেকে নিজ বাসা থেকে আবিরকে ও স্ব-রোড সোনালী আইসক্রিম মোড়ে বোনের (রনির খালা) বাসা থেকে রনিকে গ্রেপ্তার করে সাদা পোষাকের র্যাবের একটি দল।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গনমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, রাজনৈতিক দল সমূহের কর্মসূচীকে কেন্দ্র করে একটি মহল হামলা ও নাশকতার মাধ্যমে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি করে জনমনে আতংক সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এ ঘটনার পর র্যাব নজরদারি বৃদ্ধি করে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রনি ও আবিরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রনির বরাতে খন্দকার মঈন বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রনি জানিয়েছে সে একটি রাজনৈতিক দলের বরিশালের শীর্ষ পদে রয়েছে। তার দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের নির্দেশে গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় এবং পরবর্তী সময়ে বরিশালের বিভিন্ন স্থানে যানবাহনে আগুন দেয়াসহ নাশকতামূলক কর্মকান্ড পরিচালনা পরিকল্পনা করেছে। পাশাপাশি তার লোকজন দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় অগ্নিসংযোগ বা নাশকতামূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করে তার ভিডিও সংগ্রহ করে দেশে ও দেশের বাহিরে দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের কাছে পাঠিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, তার ব্যবহৃত মোবাইল চেক করে কানাডা ইউকেসহ দেশের বাহিরের বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত ব্যক্তিদের নাম্বারসহ তার দলের শীর্ষ নেতাদের নাম্বার সেভ পাওয়া গিয়েছে। সেই নম্বরে যানবাহনে আগুনদেয়াসহ নাশকতামূলক কর্মকান্ডের ভিডিও পাঠানোর তথ্য পাওয়া গেছে। পাশাপাশি সে ভিডিওগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে।
খন্দকার মঈন জানান, এর পেছনে রনি তিনটি কারণ জানিয়েছে, যার মধ্যে একটি হলো, সে দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের কাছ তার দৃঢ় অবস্থান অর্থাৎ মাঠে থেকে নাশকতা ও সহিংসতামূলক কর্মকান্ড চালাচ্ছেন, শীর্ষ নেতাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছেন সেগুলো নিশ্চিত করা আর একটি হলো সাধারণ জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করা। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ছড়িয়ে দেশে অরাজকতা চলছে সহিসংতা-নাশকতা চলছে বা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির বিষয়টি বোঝানোর চেষ্টা করতেন।
পুরো বিষয়গুলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী খতিয়ে দেখছে জানিয়ে খন্দকার মঈন বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সম্প্রতি তার একটি কল রেকর্ড ছড়িয়ে পড়েছে। যার সূত্র ধরে গ্রেপ্তারের পর রনি জানিয়েছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষনার পর ঢাকা-বরিশাল লঞ্চগুলোতে নাশকতা করে বড় ধরণের আলোড়ন সৃষ্টি করার উদ্দেশ্য ছিল। আর এ সকল ঘটনার সঙ্গে দলের শীর্ষ পর্যায়ের যারাই জড়িত রয়েছে বলে প্রমানিত হবে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। এ বিষয়ে র্যাবসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও কাজ করছে।
রনি এর আগেও অগ্নিসংযোগের কারণে কারাভোগ করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, গ্রেপ্তারদের মূল লক্ষ্য ভয়াবহ নাশকতা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর মাধ্যমে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেন্দ্রিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিনষ্ট করা এবং দেশ অরাজক বা সহিংস পরিস্থিতি বিরাজ করছে এমন বিষয় প্রতিষ্ঠা করা। গ্রেপ্তারকৃত আবির গ্রেপ্তারকৃত রেজাউল করিম রনির সহযোগী। সে রনির নির্দেশে বরিশাল মহানগরে বিভিন্ন স্থানে সড়ক ও মহাসড়কে গণপরিবহন, ব্যক্তিগত যানবাহন ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে রাস্তা অবরোধসহ চোরাগুপ্তা হামলায় অংশগ্রহণ করেছে।
তাদের বিরুদ্ধে পূর্বের পাঁচটি সহ গত ২৮ অক্টবরের পর ঢাকা ও বরিশালের বিভিন্ন নাশকতার মামলার আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার দেখানো হবে। তাদের হস্তান্তরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রযেছে।
http://dlvr.it/Sys0NB
0 Comments