Ticker

6/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

Responsive Advertisement

যুদ্ধবিরতির পরপরই ইসরায়েলি হামলায় নিহত শতাধিক ফিলিস্তিনি

সাত দিনের বিরতির পর ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ফের হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। শুক্রবার সকাল থেকে উপত্যকায় অনবরত বোমা হামলায় কমপক্ষে ১০৯ ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া আহত হয়েছেন আরও অনেকে।
হামাসের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ডা. আশরাফ আল-কুদরা বলেছেন, শুক্রবার সকাল থেকেই গাজায় তীব্র বোমাবর্ষণ শুরু করে ইসরায়েল। হামলায় এখন পর্যন্ত ১০৯ জন নিহত এবং শতাধিক আহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে, দক্ষিণ গাজা উপত্যকার খান ইউনিস এবং রাফাহ অঞ্চলে সবচেয়ে তীব্র হামলা চলছে। ওই অঞ্চলে কয়েক লাখ ফিলিস্তিনি গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে এসে আশ্রয় নিয়েছে। এ ছাড়া গাজার মধ্য ও উত্তরাঞ্চলের বাড়িঘরগুলোও বোমা হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি শেষে দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের পূর্বাঞ্চলে অনবরত বোমাবর্ষণ শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। শুক্রবার ভোর থেকেই আকাশ ধোঁয়ায় ছেয়ে যায় বলে রয়টার্সের সাংবাদিকরা জানিয়েছেন।
তাদের বর্ণনা অনুসারে, প্রাণ বাঁচাতে স্থানীয় বাসিন্দারা পশ্চিমাঞ্চলে পালাতে শুরু করেছে। ভোর থেকেই গাড়িতে জিনিসপত্র বোঝাই করে তারা রাস্তায় নেমে পড়ে।
উপত্যকার উত্তরাঞ্চল, যে জায়গা থেকে হামলার শুরু, সেখানে পুনরায় হামলা করতে দেখা গেছে। বোমা হামলার সঙ্গে সেখানে গোলাগুলির শব্দও শোনা গেছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। এমনকি কয়েকবার রকেট হামলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।

এ ঘটনার কারণ হিসেবে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে রকেট ছুড়ে হামাস যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করছে বলে অভিযোগ করেছে ইসরায়েল।
গত শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) চার দিনের সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় হামাস ও ইসরায়েল। দুই পক্ষের কাছে জিম্মিদের মুক্তি, গাজায় ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ ও বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার সুযোগ দিতে এ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় তারা।
কাতার ও মিশরের মধ্যস্ততায় এবং রেড ক্রসের সহযোগিতায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।
চার দিনের ওই বিরতি পরে আরও দুইদিন বাড়ানো হয়। পরে তা বাড়ে আরও একদিন। সেটিকে স্থায়ী রূপ দিতে চাপ দিচ্ছিল জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মহল। তবে বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বৃদ্ধির চুক্তিতে একমত হতে পারেনি হামাস-ইসরায়েল। এরপর শুক্রবার সকাল থেকেই উপত্যকায় নির্বিচারে হামলা শুরু করে দখলদার ইসরায়েলি সেনারা।
সাত দিনের এই যুদ্ধবিরতিকালে মোট ১০৫ জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। এর মধ্যে রয়েছে ইসরায়েলি নাগরিক, বিদেশি নাগকি ও দ্বৈত নাগরিক। অন্যদিকে ২৪০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ঢুকে আকস্মিক হামলা চালায় হামাস। ওই হামলার প্রতিক্রিয়ায় গাজায় টানা হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। হামলা শুরুর পর ৯ অক্টোবর গাজায় সর্বাত্মক অবরোধের ঘোষণা দেয় দখলদার ইসরায়েল।
টানা হামলার শিকার গাজায় খাবার, পানি, ওষুধ ও জ্বালানির সংকট দেখা দেয়। এ অবস্থায় যুদ্ধবিরতি চলাকালে মিশরের রাফা ক্রসিং দিয়ে কয়েকটি ত্রাণবাহী ট্রাক ঢোকে উপত্যকতায়। তবে যুদ্ধবিরতির সাত দিনে যে পরিমাণ চিকিৎসা সরঞ্জাম গাজায় পৌঁছেছে, সেগুলো দিয়ে আহতদের আর মাত্র একদিন চিকিৎসা সেবা দেয়া যাবে বলে জানিয়েছে হামাস সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। চিকিৎসা সামগ্রী প্রবেশে রাফাহ ক্রসিং খুলে দেয়ার অনুরোধও জানিয়েছে তারা।

এতদিন গাজায় জ্বালানি প্রবেশে ইসরায়েলের অনুমতি ছিল না। বিভিন্ন সংস্থা ও আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে সম্প্রতি শুধু হাসপাতাল ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোর জন্য জ্বালানির অনুমতি দেয়া হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সেখানে ঢুকেছে কয়েকটি জ্বালানিবাহী ট্রাক।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসে বিমান হামলার পর থেকে এ পর্যন্ত ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলির নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। অন্যদিকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নারী ও শিশুসহ ১৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
ভূমধ্যসাগরের তীরবর্তী গাজার সীমান্তের বড় অংশই ইসরায়েলের সঙ্গে, বাকিটা মিশরের সঙ্গে। এর দৈর্ঘ্য ৪১ কিলোমিটার এবং প্রশস্ত ১০ কিলোমিটার।


http://dlvr.it/SzZdWB

Post a Comment

0 Comments