Ticker

6/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

Responsive Advertisement

ইবিতে গণরুমে ফের শিক্ষার্থীকে বিবস্ত্র করে র‍্যাগিংয়ের অভিযোগ

ফুলপরীর ঘটনার এক বছর না যেতেই কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) লালন শাহ হলের গণরুমে শিক্ষার্থীকে বিবস্ত্র করে র্যাগিংয়ের অভিযোগ পেয়েছে প্রশাসন।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টা থেকে ৮ ফেব্রুয়ারি ভোররাত সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ওই শিক্ষার্থীকে র্যাগিংয়ের অভিযোগ পাওয়া যায়।
র্যাগিংয়ের অভিযোগকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-ফিকহ ও লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় শুরুতে বিষয়টি মিটমাটের চেষ্টা করা হলেও পরে তা নজরে এসেছে প্রশাসনের।
র্যাগিংয়ে অভিযুক্তরা হলেন শারীরিক শিক্ষা বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের মুদাচ্ছির খান কাফি ওইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের মোহাম্মদ সাগর।
অভিযোগকারী ও অভিযুক্তরা লালন শাহ হলের ১৩৬ নম্বর গণরুমের আবাসিক শিক্ষার্থী।
ওই ঘটনায় এখনও লিখিত অভিযোগ দেননি অভিযোগকারী। এ নিয়ে বিস্তারিত কিছু বলছেনও না তিনি।
মীমাংসার অভিও
ওই ঘটনার মীমাংসার একটি অডিও এসেছে নিউজবাংলার হাতে। এতে শোনা যায় লালন শাহ হলের ছাত্রলীগকর্মী নাসিম আহমেদ মাসুম ও হাফিজ ঘটনার পরের দিন ৮ ফেব্রুয়ারি রাতে অভিযোগকারী ও অভিযুক্তদের ডেকে নিয়ে বিষয়টি মিটমাট করে দেন। ওই সময় অভিযুক্তদের গালিগালাজ করে শাস্তি হিসেবে ছাত্রলীগের সব কর্মসূচিতে ক্লাস মিস দিয়ে উপস্থিত হতে বলা হয়।
অডিওতে অভিযোগকারীর কণ্ঠে ওই রাতে ঘটে যাওয়া অধিকাংশ ঘটনা প্রকাশ পায়।
অভিযোগকারীর ভাষ্য, তাকে ১৩৬ নম্বর কক্ষে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন অভিযুক্তরা। পরে তাকে নানা ধরনের কুরুচিপূর্ণ আচরণ করতে বললে তিনি অস্বীকৃতি জানান। এ কারণে তাকে (অভিযোগকারী) বারবার রড দিয়ে আঘাত করতে থাকেন অভিযুক্তরা। পরে তারা জোর করে প্যান্ট খুলে বিবস্ত্র করে তাকে টেবিলের ওপর দাঁড় করিয়ে রাখেন।
ছাত্রলীগের ভাষ্য
ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী জানান, ঘটনার পরের দিন ৮ ফেব্রুয়ারি দুপুরে জিয়া মোড়ে শাখা ছাত্রলীগকর্মী হাফিজ ও নাসিম আহমেদ মাসুমসহ কিছু নেতা-কর্মী অভিযুক্তদের ডেকে এনে অভিযোগকারীর কাছে মাফ চাওয়ান। ওই সময় তারা অভিযুক্তদের চড়-থাপ্পড়ও দেন।
পরে লালন শাহ হলের ১৩৬ নম্বর কক্ষে দ্বিতীয় দফায় শাখা ছাত্রলীগের কর্মী শাহিন আলম, নাসিম আহমেদ মাসুম ও লিখন অভিযোগকারী ও অভিযুক্তদের নিয়ে বসে বিষয়টির মধ্যস্থতা করেন।
ছাত্রলীগের মধ্যস্থতার পরও ঘটনাটি প্রকাশ পাওয়ায় অভিযোগকারীকে ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ এসেছে। এ ছাড়া অভিযোগকারী নিজেও বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তিনি সংবাদমাধ্যমে বিস্তারিত বক্তব্য দিতে অস্বীকৃতি জানান।
অভিযোগকারী বলেন, গত বুধবার সিনিয়রদের সঙ্গে কিছু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। পরে হল ছাত্রলীগের সিনিয়র ভাইয়েরা বিষয়টা মিটমাট করে দেন এবং ওই সিনিয়ররা আমার কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন।
অভিযুক্ত শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সাগর ঘটনাটি অস্বীকার করে বলেন, এ রকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। তা ছাড়া আমি ওই দিন হলের বাইরে ছিলাম। ওই রুমে ছিলাম না; পাশের রুমে ছিলাম।
এ ঘটনায় মধ্যস্থতাকারী ছাত্রলীগকর্মী নাসিম আহমেদ মাসুম বলেন, ঘটনাটি মিটমাট হয়ে গেছে। তাদের মধ্যে কিছু ভুল বোঝাবুঝি ছিল। আমরা তাদের ডেকে বুঝিয়ে দিয়েছি এবং ওই সিনিয়রদের নজরে রাখছি।
এ বিষয়ে ইবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয় বলেন, বিষয়টি মীমাংসা করা হয়েছে। যদি ভুক্তভোগী এ বিষয়ে অভিযোগ দিলে এবং অভিযুক্তরা ছাত্রলীগ কর্মী হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
যা বলছে প্রশাসন
লালন শাহ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আকতার হোসেন বলেন, আমি বিষয়টি জেনেছি। খোঁজ নিয়ে আরও বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছি, তবে ভুক্তভোগী এখনও কোনো অভিযোগ দেয়নি। যদি অভিযোগ দেয়, দোষীদের বিরুদ্ধে অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা নেব।
এ বিষয়ে ইবির প্রক্টর মঙ্গলবার বলেন, ভুক্তভোগীর কাছ থেকে আমরা কোনো অভিযোগ পাইনি, তবে বিষয়টি সম্পর্কে যখনই জেনেছি, তখনই প্রক্টরিয়াল বডিকে পাঠিয়েছি। কুষ্টিয়া থানার পুলিশও বিষয়টি নজরে এনেছে।
আমরা প্রশাসন গতকাল (সোমবার) মিটিং করেছি। ভুক্তভোগী অভিযোগ না দিলেও হাইকোর্টের নির্দেশ রয়েছে অভিযোগ পেলেই তদন্ত নামার। আজকের মধ্যে কমিটিও গঠন করে দেব।


http://dlvr.it/T2ghz3

Post a Comment

0 Comments