প্রথম ম্যাচ জয়ে চট্টগ্রামে বেশ ফুরফুরে মেজাজেই রয়েছে টিম বাংলাদেশ। তিন ম্যাচের সিরিজে ইতোমধ্যেই ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে আছে নাজমুল শান্তর দল। সিরিজ জয়ের লক্ষ্যে আজ শুক্রবার দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচে আবারও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। এ ম্যাচটিও দুপুর আড়াইটায় চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে। খেলার চলতি ধারাবিবরণী সরাসরি সম্প্রচার করবে বাংলাদেশ বেতার।
প্রথম ম্যাচে ২৫৬ রানের তাড়ায় ব্যাট করতে নেমে ঘরের মাঠে ২৩ রানেই নেই বাংলাদেশের টপঅর্ডারের ৩ ব্যাটসম্যান। স্বাভাবিকভাবেই তখন যেন আরেকটি হারের চোখ রাঙানি দিচ্ছিল বাংলাদেশকে। এমন বিপদের মুহূর্তে ব্যাট হাতে দলকে নেতৃত্ব দিলেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিলেন মুশফিকুর রহিম। তাদের দুজনের বীরত্বগাথা ব্যাটিংয়েই প্রথম ওয়ানডেতে জয়ের পরশ পেল টাইগাররা। দ্বিতীয় ম্যাচেও কি এমন কিছু হবে? সেই চিন্তা করার কোনো ফুরসত নেই। কারণ দ্বিতীয় ম্যাচে জয় পেতে হলে বাংলাদেশকে খেলতে হবে দল হিসেবে।
সেই বিশ্বকাপ থেকে শুরু হয়েছে বাংলাদেশের টপঅর্ডার ব্যাটারদের রান খরার ধারাবাহিকতা। সেটা এখনো চলমান। এক ম্যাচে ব্যাট হাসলে গুমরো করে থাকে এরপর কয়েক ম্যাচ। এই সময়টাতে বাংলাদেশকে লজ্জার হাত থেকে বাঁচানো কিংবা জয় এনে দেওয়ার কাজটা বেশ ভালোভাবেই করেছেন বোলাররা। শেষ ম্যাচে লঙ্কানদের বিপক্ষেও চট্টগ্রামের ব্যাটিং পিচে মেন্ডিসদের আটকে রেখেছিল অল্প রানেই। যেটা শেষ পর্যন্ত বড় ভূমিকা রেখেছিল বাংলাদেশের জয়ের ক্ষেত্রে।
শুধু কি বোলাররাই ম্যাচ জেতাবে? সে রকমও ভাবার সুযোগ নেই। কারণ চট্টগ্রামে বরাবরই বেশ বড় রানের স্কোর হয়। সে জন্য ভূমিকা রাখতে হবে ব্যাটারদেরই। রানে ফিরতে হবে লিটন দাস-সৌম্য সরকারদের। পালন করতে হবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে একটা বিষয় বেশ ফুটে উঠেছে; সেটা হলো মাঠের আবহাওয়া। প্রথম ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসে বড় প্রভাব দেখা গেছে শিশিরের। ম্যাচ হারার পর যেটাকে অনেকটা দায়ী করেছিলেন লঙ্কান খেলোয়াড়। দ্বিতীয় ম্যাচেও সে রকম কিছু হওয়ার বেশ সম্ভাবনা আছে। কারণ দ্বিতীয় ম্যাচটিও হবে একই সময় এবং একই স্টেডিয়ামে। তাই এই ম্যাচেও জয়ের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা থাকবে টসের।
প্রথমে ব্যাট করতে নেমে দুই লঙ্কান ওপেনার গড়লেন ৭১ রানের জুটি। খেলে ফেললেন প্রায় পুরো পাওয়ার প্লে। কোনোভাবেই ভাঙা যাচ্ছে না তাদের জুটি। এরপর বোলিংয়ে আসলেন তরুণ পেসার তানজিম হাসান সাকিব। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে ফেরালেন ওপেনার আভিষ্কা ফার্নান্দোকে। তার দুর্দান্ত বলে বিট হয়ে ক্যাচ দিলেন উইকেটকিপার মুশফিকুর রহিমকে। নিজের পরের ওভারে এসে এবার বোকা বানালেন আরেক ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কাকে। কাট শট খেলতে গিয়ে ক্যাচ দিলেন স্লিপে থাকা সৌম্য সরকারের হাতে। এর পরের ওভারে শিকার সাদিরা সামিরা বিক্রমা।
৭১ রানে কোনো উইকেট না হারানো শ্রীলঙ্কার স্কোর তখন দাঁড়াল ৮৪ রানে ৩ উইকেট। এরপর আর সেভাবে ম্যাচে ফিরতে পারেনি লঙ্কানরা। তানজিম সাকিবের ওই স্পেলটা বড় ভূমিকা রেখেছিল ম্যাচ জয়ে। এরপর বাকি বোলাররাও চেপে ধরেছিল কুশল মেন্ডিসদের। আজকের ম্যাচেও সে রকম কিছুই করতে হবে তানজিম-শরিফুল-তাসকিনদের।
এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জয় করতে চাইলে বাংলাদেশকে খেলতে হবে দল হিসেবে। সমানভাবে ভালো করতে হবে ব্যাটিং, বোলিং এবং ফিল্ডিংয়ে। ধারাবাহিকতা ফিরিয়ে আনতে হবে সবারই। যেমনটা প্রথম ম্যাচের আগে অধিনায়ক নাজমুল শান্ত জানিয়েছিলেন। তাহলেই সিরিজ জয়ে আর কোনো বাধা থাকবে না টাইগারদের।
http://dlvr.it/T45NFs
0 Comments