পঞ্চগড়ে অব্যাহতভাবে খরা এবং দীর্ঘমেয়াদে অনাবৃষ্টির কারণে কৃষকদের বাড়তি সেচ সরবরাহ করে বোরো আবাদ করতে হয়েছে এবার। নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও ভালো ফলন আশা করছেন চাষিরা, তবে এ মুহূর্তে ঝড় বৃষ্টি হলে পাকা ধানের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
চলতি মৌসুমে পঞ্চগড়ে দুই লাখ পাঁচ হাজার ৩৬০ টন বোরো উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে ৩০ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ করা হয়েছে। এখন ধান কর্তনের সময় এসেছে।
এদিকে জাতগত তারতম্যের কারণে কিছু কিছু জায়গায় বিভিন্ন ক্ষেতে ব্লাস্ট (ধানের গলা পচা রোগ) রোগের আক্রমণে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা কিছুটা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। চাষিরা বলছেন, ভালো দাম থাকলে তারা লাভবান হবেন।
ভজনপুর এলাকার চাষি রফিকুল ইসলাম জানায়, প্রতি বছরের চেয়ে এবার তার বোরোর ফলন ভালো হয়েছে। যদিও পরিমিত বৃষ্টিপাত হয়নি, বাড়তি সেচ প্রদান করে বোরো রক্ষা করেছে। এখন শেষ সময় পর্যন্ত আবহাওয়া ভালো থাকলে ভালো হয়।
তেঁতুলিয়া উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের বোরো চাষি অমর আলী জানান, ধানের শিষ বের হওয়ার পর থেকে পরিচর্যার কমতি করেননি, কিন্তু ধান পাকার সঙ্গে সঙ্গে ব্লাস্টের আক্রমণ সব আশাকে নিরাশায় ফেলেছে। এখন আবার বৃষ্টি নিয়ে চিন্তা।
তেঁতুলিয়া উপজেলার শালবাহান এলাকার আবদুল মতিন বলেন, ব্লাস্টের আক্রমণে এমনিই ক্ষতিগ্রস্ত তিনি। তার উপর যদি ধান কাটার সময় ঝড় বৃষ্টি শুরু হয়, পাকা ধান নষ্ট হবে।
মহাজনের ঋণ পরিশোধ কীভাবে করবেন তা নিয়েই হতাশায় পড়েছেন মতিন।
কৃষকরা জানান, ঝড় বৃষ্টিতে ধানের ক্ষতি হওয়ার চিন্তা তো আছেই, এর মধ্যে জেলার কিছু কিছু জায়গায় ব্লাস্ট রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এক ক্ষেত থেকে অন্য ক্ষেতে।
তবে কৃষি বিভাগের দাবি, কেবল ২৮ এবং ৬১ জাতের ধানেই এ ছত্রাক দেখা দিয়েছে। সংক্রমণ সামান্য এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চলছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুল মতিন জানান, বিরূপ আবহাওয়ার কারণেই পঞ্চগড়ের কিছু অঞ্চলে ব্রি ২৮ এবং ৬১ দুটি জাতের ধানে ব্লাস্ট ছত্রাক আক্রমণ করেছে। এটি একটি বীজ বাহিত রোগ, প্রতিকূল পরিবেশ পেলে এই রোগের বিস্তার হবে।
তিনি জানান, সামগ্রিকভাবে এ বছর বোরোর আবাদ ভালো।
http://dlvr.it/T6kHvF
0 Comments