Ticker

6/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

Responsive Advertisement

পেটে গজ রেখেই সেলাই, গুরুতর অসুস্থ প্রসূতি

নওগাঁয় এক প্রসূতির পেটে গজ রেখেই সেলাই করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে শহরের একটি ক্লিনিকের বিরুদ্ধে। পরে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ওই নারীকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে পুনরায় অপারেশনের পর পেটের ভেতর থেকে বের করা হয় রক্ত পরিষ্কার করার গজ কাপড়।
গত বুধবার সকালে শহরের একতা ক্লিনিকে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান ওই নারীর স্বামী উজ্জ্বল হোসেন।
প্রসূতি নারীর নাম সুমি খাতুন (৩০)। তিনি বর্তমানে আইসিইউতে আছেন। আর সদ্যোজাত বাচ্চাকে ভর্তি করা হয়েছে ওয়ার্ডে। সুমি জেলার আত্রাই উপজেলার বান্দাইখাড়া এলাকার উজ্জ্বল হোসেনের স্ত্রী।
সুমির পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ১৫ মে প্রসবব্যথা শুরু হলে শহরের হাসপাতাল রোড এলাকায় অবস্থিত একতা ক্লিনিকে নেয়া হয় ওই প্রসূতি নারীকে। সেখানে ওই দিনই সিজার করান প্রসূতি বিদ্যা ও স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ সার্জন ডাক্তার তানিয়া রহমান তনি।
সিজারের জন্য জেনারেল অ্যানেস্থেসিয়া প্রয়োগ করেন ডাক্তার তানিয়ার স্বামী নওগাঁ সদর হাসপাতালের অ্যানেসথেসিওলজিস্ট ডাক্তার আদনান ফারুক।
পরিবার জানায়, সিজারের পরই ওই সুমি তার পেটে তীব্র ব্যথা অনুভব করেন এবং প্রচুর পরিমাণে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। ডাক্তার তানিয়া ক্লিনিকের মার্কেটিং অফিসার আব্দুর রউফকে দিয়ে দ্রুত রোগীর পেটে সেলাই করিয়ে নেয়। তার পর বুধবার রাত ১০টার দিকে রামেক হাসপাতালে পাঠানো হয় সুমিকে।
রামেক সূত্র জানায়, হাসপাতালে নেয়ার পর রাতেই আল্ট্রাসনোগ্রাফিতে জানা যায় সুমির পেটে বাড়তি কিছু একটা জিনিস রয়েছে। আর সেটার জন্য তাকে বৃহস্পতিবার সকালে পরিবারের সম্মতিতে ফের অপারেশন করার পর পেট থেকে গজ পাওয়া যায়।
ভুল অপারেশন ও অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে সংকটপূর্ণ অবস্থায় বর্তমানে তাকে আইসিইউতে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
সুমির স্বামী উজ্জ্বল হোসেন বলেন, ডাক্তার তানিয়া সিজার করার পর পেটেই গজ রেখেছিল। আবার হাসপাতালের মার্কেটিং অফিসারকে দিয়ে কীভাবে পেটে সেলাই করিয়ে নেয়। তিনি তো এ বিষয়ে কোনো প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নয়।
রক্তক্ষরণও বন্ধ হচ্ছিল না। আমার স্ত্রীর অবস্থা এখনও সংকটাপন্ন। আমরা এর বিচার চাই। বর্তমানে আমরা রাজশাহীতে রয়েছি। আমরা মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি ডাক্তার ও ক্লিনিক মালিকের বিরুদ্ধে।
একতা ক্লিনিকের মার্কেটিং অফিসার আব্দুর রউফ বলেন, ডাক্তার তানিয়া আমাকে যেভাবে শিখিয়ে দিয়েছিল সেভাবেই আমি সেলাই করেছি।
আপনি কি এ বিষয়ে অভিজ্ঞ কিনা বা এটা আপনার কাজ কিনা জানতে চাইলে তিনি সঠিক কোনো তথ্য দিতে পারেননি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ডাক্তার তানিয়া রহমান তনিকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, চেম্বারে রোগী দেখছি পাঁচ মিনিট পর আপনাকে কলব্যাক করছি। তবে এর পর তাকে ফোন দিয়ে আর পাওয়া যায়নি।
ডাক্তার তানিয়ার স্বামী ডাক্তার আদনান ফারুককেও একাধিকবার ফোন করা হলে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
ক্লিনিক মালিক মাসুদুর আলম বলেন, ঘটনার জন্য আমরা দায়ী নয়। যেসব ডাক্তার এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের সাথে কথা বলুন।
আপনার ক্লিনিকে সিজার করার সময় এমন ঘটনা ঘটেছে, তাহলে আপনার এখন করণীয় কী?- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন রোগীর জন্য দোয়া করা ছাড়া আর কিবা করতে পারি।
এ বিষয়ে কথা হলে সিভিল সার্জন নজরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আপনার কাছে থেকে অবগত হলাম। আমরা খোঁজ নিয়ে অবশ্যই দেখব। আর রোগীর অভিভাবক কেউ যদি অভিযোগ করেন তাহলে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে।


http://dlvr.it/T77N8k

Post a Comment

0 Comments