Ticker

6/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

Responsive Advertisement

সার্বজনীন পেনশনে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি বাতিলে আলটিমেটাম

সার্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিমে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি বাতিলের দাবিতে সরকারকে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন।
এ সময়ের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়া না হলে সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে একযোগে মানববন্ধন এবং কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি।
সোমবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এই ঘোষণা দেয়া হয়। বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিব ও ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি নিজামুল হক ভূঁইয়া।
সম্মেলনে ৩৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত ১৩ মার্চ অর্থমন্ত্রণালয়ের জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে স্ব-শাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থা বা তাদের অধীন অঙ্গপ্রতিষ্ঠানসমূহকে প্রত্যয় স্কিমের অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যা চলতি বছরের ১ জুলাই এবং তার পরবর্তী সময়ে যারা চাকরিতে নতুন যোগদান করবেন তাদের জন্য প্রযোজ্য হবে।
এরপর থেকেই এ স্কিম থেকে পাবলিক শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি বাতিলের বাতিলের দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
সর্বশেষ আজ সংবাদ সম্মেলন ডেকে প্রত্যয় স্কিম থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি বাতিলের দাবিতে তিনটি কর্মসূচি ঘোষণা করেন দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সংগঠন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিব অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়া।
তিনি বলেন, আমাদের প্রথম কর্মসূচি হলো আগামী ২৫ মে তারিখের মধ্যে এ বিষয়ে কোনো ধরনের কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা না হলে ২৬ মে, রবিবার সারা দেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের শিক্ষকরা একযোগে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করবেন।
দ্বিতীয় কর্মসূচি, আগামী ২৮ মে মঙ্গলবার সারা দেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালসমূহের শিক্ষকরা একযোগে সকাল ১অটা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কর্মবিরতি পালন করবেন।
নিজামুল হক ভুঁইয়া বলেন, এ সময়ের মধ্যেও দাবি না মানা হলে আমাদের তৃতীয় কর্মসূচি, আগামী ৪ জুন, মঙ্গলবার সারা দেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালসমূহের শিক্ষকরা একযোগে অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করবেন, তবে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষাসমূহ এসব কর্মসূচির আওতামুক্ত থাকবে।
আর এই সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা না হলে ওই দিনই আন্দোলনের বৃহত্তম কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে উল্লেখ করেন অধ্যাপক নিজাম।
লিখিত বক্তব্যে অধ্যাপক নিজামুল হক ভুঁইয়া বলেন, সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার ধারণা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একটি কল্যাণমুখী চিন্তার ফসল। বাংলাদেশের ইতিহাসে এটি একটি যুগান্তকারী ঘটনা। সর্বজনীন পেনশন স্কিম প্রবর্তনের মাধ্যমে সরকারি চাকরির বাইরে থাকা নাগরিকদের পেনশন স্কিমের আওতায় আনায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।
যখন সরকারের এমন মহৎ উদ্যোগ যখন প্রশংসিত হচ্ছে, ঠিক সেই মুহূর্তে শিক্ষকদের সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা না করে গত ১৩ই মার্চ অর্থমন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপনে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেয়া স্বায়ত্তশাসনকে অবজ্ঞার শামিল।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেদিন সর্বজনীন পেনশন স্কিমের উদ্বোধন করেন সেদিন এই প্রত্যয় স্কিমটি ছিল না। হঠাৎ করেই একটি মহল নিজেদের সুযোগ সুবিধা অক্ষুণ্ন রেখে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের ওপর এ ধরনের একটি বৈষম্যমূলক ব্যবস্থা চাপিয়ে দিয়েছেন।
আমরা আশা করব, অনতিবিলম্বে এই প্রজ্ঞাপনটি প্রত্যাহার করে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যমান সেশনজটমুক্ত শিক্ষার পরিবেশ অব্যাহত রাখতে সহায়তা করবেন।
বক্তব্যে আরও বলা হয়, প্রত্যয় স্কিমে অন্তর্ভুক্তি ১ জুলাই তারিখের আগে যোগ দেয়া এবং ১ জুলাই এবং তার পরে যোগ দেয়াদের মধ্যে দুটি শ্রেণির জন্ম দেবে। একই কর্মক্ষেত্রে অবস্থানরত সহকর্মীদের মধ্যে এই বিভাজন শিক্ষা ও গবেষণার পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে; এই ব্যবস্থা সরকারি অন্যান্য চাকরিজীবী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বৈষম্য তৈরি করবে, যা সংবিধানের সমতার নীতির পরিপন্থি।
সুবিধা অসুবিধা তুলে ধরে আরও বলা হয়, বিদ্যমান পেনশন ব্যবস্থায় পেনশনের ওপর বৎসরিক পাঁচ শতাংশ হারে ইনক্রিমেন্ট প্রদান করা হয়, কিন্তু সর্বজনীন পেনশন স্কিমে বিষয়টি সুস্পষ্ট নয়; বিদ্যমান ব্যবস্থায় অর্জিত ছুটি নগদায়নের ব্যবস্থা রয়েছে, কিন্তু প্রস্তাবিত স্কিমে সে সুবিধা নেই; বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদকাল ৬৫ বছর। প্রত্যয় স্কিমে অবসরকালীন বয়স স্থির করা হয়েছে ৬০ বছর; বিদ্যমান ব্যবস্থায় পেনশনের সঙ্গে মাসিক চিকিৎসাভাতা, বছরে দুটি উৎসবভাতা ও একটি বৈশাখীভাতা প্রদান করা হয়। প্রস্তাবিত স্কিমে বিষয়টি উল্লেখ নেই।


http://dlvr.it/T77T3B

Post a Comment

0 Comments