Ticker

6/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

Responsive Advertisement

বাংলাদেশে গণহত্যার বৈশ্বিক স্বীকৃতি অর্জনে কার্যকর কূটনৈতিক সক্রিয়তা প্রয়োজন: বিচারপতি শাহিনুর

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের আয়োজনে শহর থেকে গ্রামে বাংলাদেশ জেনোসাইডের বিস্তৃতি: আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ের আলোকে মূল্যায়ন শীর্ষক বক্তৃতা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারক বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম বলেন, ট্রাইব্যুনালের বিচারিক কর্মে যুক্ত থেকে এটি দেখেছি যে, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালে জেনোসাইড (গণহত্যা) ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠন কেবল শহর ও নগর এলাকায় সীমাবদ্ধ থাকেনি, গ্রামীণ ও প্রান্তিক এলাকাতেও তা বিস্তৃত ছিল। আর এটি করতে প্রত্যক্ষ ও কার্যকর অংশগ্রহণ ও সহায়তা করে পাকিস্তানি দখলদার সেনাবাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার, আল-বদর বাহিনীর সদস্যরা। এটি এখন প্রতিষ্ঠিত সত্য।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে সংঘঠিত গণহত্যার বৈশ্বিক স্বীকৃতি অর্জনের জন্য আরো বেশি কার্যকর রাষ্ট্রীয় ও কূটনৈতিক সক্রিয়তা প্রয়োজন। এজন্য ট্রাইব্যুনালের রায়ে উঠে আসা বর্বর অপরাধের চিত্র তুলে ধরা অনিবার্য।
বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত এ বক্তৃতা ও আলোচনা সভাটি ছিল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও জেনোসাইড বক্তৃতামালার চতুর্থ বক্তৃতা।
সভায় মূল বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ প্রফেশনালসের (বিউপি) আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের গবেষক ইমরান আজাদ। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রজন্ম ৭১-এর সভাপতি ও একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক শহীদসন্তান আসিফ মুনীর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. জোবাইদা নাসরীন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. শহীদ কাদের চৌধুরী এবং ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের প্রভাষক উপল আদিত্য ঐক্য।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের (সিজিএস) পরিচালক অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান (কার্জন)।
মূল প্রবন্ধে প্রবন্ধকার বলেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যার মাধ্যমে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসররা শহর-গ্রাম সর্বত্রই নারী-পুরুষ-শিশু, হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে সকলের ওপর অবর্ণনীয় তাণ্ডব চালায়।
তিনি বলেন, ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ৫৫টি রায় বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এই তাণ্ডবলীলায় গ্রামগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। বিশেষ করে নৃ-গোষ্ঠী হিসেবে বাঙালি, ধর্মীয় পরিচয়ে হিন্দু এবং লিঙ্গ পরিচয়ে নারীরা ভয়াবহ শারীরিক, মানসিক ও বৈষয়িক ক্ষতির শিকার হন। গ্রামবাংলার বিপুল মানুষ গণহত্যার শিকার হন।
বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মামলা থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের গ্রামগুলোতে কী ভয়াবহ গণহত্যা হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধ ও গণহত্যার ইতিহাস লিপিবদ্ধ করার ক্ষেত্রে প্রচলিত ধারার বিপরীতে এটি গবেষণার ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।
সভাপতির বক্তেব্যে অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান (কার্জন) বলেন, বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল অল্প সময় ও খরচে আন্তর্জাতিক অপরাধের বিচারের ক্ষেত্রে যে দক্ষতা ও সাফল্য দেখিয়েছে, সেটি বৈশ্বিকভাবে একটি ভালো নজির হিসেবে অনুসৃত হবে।


http://dlvr.it/T8rv6D

Post a Comment

0 Comments