যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী গত মে মাসের শেষের দিকে সোমালিয়ায় আইএসআইএসের শীর্ষ নেতা আবদুল কাদির মুমিনের গোপন আস্তানা লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে। তবে হামলায় আবদুল কাদির মুমিন নিহত বা আহত হয়েছেন কিনা তা নিশ্চিত করতে পারেননি যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা।
সংবাদমাধ্যম এনবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ইউএস আফ্রিকা কমান্ড (দ্য আফ্রিকম) ৩১ মে এক বিবৃতিতে বলেছে যে তারা সোমালিয়ার বোসাসো থেকে ৮১ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে একটি প্রত্যন্ত অঞ্চলে আইএসআইএস জঙ্গিদের লক্ষ্য করে একটি বিমান হামলা চালিয়েছে। ওই হামলায় তিনজন নিহত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র সরকার আবদুল কাদির মুমিনকে প্রকাশ্যে সোমালিয়ায় আইএসআইএসের সহযোগী সংগঠনের প্রধান হিসেবে চিহ্নিত করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের দুই কর্মকর্তা দাবি করেন, আবদুল কাদির মুমিন গত বছর গোপনীয়তার সঙ্গে বিশ্বব্যাপী এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর নেতা নির্বাচিত হয়েছেন।
অ্যামেরিকান তিন কর্মকর্তা বলছেন, আবদুল কাদির মুমিনকে লক্ষ্য করেই ওই হামলা চালানো হয়। তবে হামলায় তিনি নিহত বা আহত হয়েছেন কিনা সে বিষয়ে তারা নিশ্চিত হতে পারেনননি। তবে হামলার ফল যাচাইয়ে যুক্তরাষ্ট্র কাজ করে যাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ঊর্ধ্বতন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা বলেছেন, সোমালিয়ায় আইএসআইএস তুলনামূলকভাবে ছোট। এখানে তাদের মাত্র ১০০ থেকে ২০০ যোদ্ধা রয়েছে, যারা মূলত উত্তর সোমালিয়ায় অবস্থান করছে। তবে লিবিয়া, ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অফ দ্য কঙ্গো ও মোজাম্বিকসহ আফ্রিকার বিভিন্ন অংশে আইএসআইএসের অন্যান্য ছোট ছোট গ্রুপ রয়েছে।
আইএসআইএসের এখনও বিশ্বজুড়ে কয়েক হাজার যোদ্ধা রয়েছে, যারা প্রাথমিকভাবে উত্তর ইরাক ও উত্তর-পূর্ব সিরিয়ায় অবস্থান করছে।
তবে ইরাক ও সিরিয়ায় আইএসআইএস নেতৃত্বের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর অবস্থানের কারণে আইএসআইএস নেতারা আফ্রিকাকে একটি সুরক্ষিত জায়গা হিসেবে বিবেচনা করে থাকে। সেখানে তারা স্বাধীনভাবে কাজ করতে সক্ষম।
তারা আফ্রিকায় আইএসআইএস সেলকে প্রসারিত করতে চায়। তাই ওই অঞ্চলে খলিফা বা শীর্ষ নেতা নির্বাচন করেছে বলে ধারণা যুক্তরাষ্ট্রের।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, আইএস নেতৃত্বের কৌশলগত নির্দেশনার কারণে আফ্রিকায় তাদের নেটওয়ার্ক বিস্তৃত হয়েছে।
কর্মকর্তা বলেন, এফবিআই ও ইন্টারপোলের নজর এড়িয়ে অর্থায়নের মতো কৌশল একে অপরের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নেয়াসহ সোমালিয়ায় সক্রিয় অন্যান্য সন্ত্রাসী নেটওয়ার্কের তুলনায় আইএস জঙ্গিরা নির্দিষ্ট কিছু উপায়ে বেশি সক্রিয়।
অ্যামেরিকা বলছে, মুমিন গত এক দশক ধরে সোমালিয়া জুড়ে প্রাণঘাতী হামলার জন্য দায়ী। এসব হামলার মধ্যে রয়েছে ২০১৯ সালে বিচার বিভাগীয় এক কর্মকর্তাকে হত্যা এবং ২০১৬ সালে পুন্টল্যান্ড অঞ্চল দখল করে কয়েক মাস ধরে অঞ্চলটি শাসন করা।
অ্যামেরিকা ২০১৬ সালে তাকে বিশেষভাবে মনোনীত বৈশ্বিক সন্ত্রাসী ঘোষণা করে। তাকে অ্যামেরিকান নাগরিকদের নিরাপত্তা বা জাতীয় নিরাপত্তা, পররাষ্ট্রনীতি ও অর্থনীতির জন্য হুমকিস্বরূপ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করার জন্য উল্লেখযোগ্য ঝুঁকি হিসেবে বর্ণনা করা হয়।
আইএসের সর্বশেষ শীর্ষ নেতা হিসেবে মুমিনের দায়িত্ব নেয়ার তথ্য অ্যামেরিকার কাছে ছিল না বলে জানিয়েছেন দুই অ্যামেরিকান কর্মকর্তা। তিনি ২০২২ সালের শেষের দিকে সিরিয়ায় যুদ্ধে নিহত আবু আল-হাসান আল-হাশিমি আল-কুরাশির জায়গা নেন।
http://dlvr.it/T8KTTW
0 Comments