চাকরিতে কোটা বাতিলের পরিপত্র পুনর্বহালসহ চার দাবিতে গণপদযাত্রাসহ তিনদিনের লাগাতার কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থী এবং চাকরি প্রত্যাশীরা। তারা তাদের এই আন্দোলনের নাম দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে আয়োজিত শিক্ষার্থী সমাবেশ থেকে নতুন এই কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম।
তিনি বলেন, আগামীকাল মঙ্গলবার বেলা আড়াইটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার থেকে গণপদযাত্রা শুরু হবে। দেশের বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীদের একই সময়ে একই কর্মসূচি পালনে আহ্বান জানানো জানাচ্ছি।
এছাড়া বুধ ও বৃহস্পতিবার (৩ ও ৪ জুলাই) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, অধিভুক্ত সাত সরকারি কলেজ এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ঢাকার অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যে একত্র হবেন।
সোমবার শিক্ষার্থীরা পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হন। এরপর সেখান থেকে শিক্ষার্থীদের মিছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল, অ্যাকাডেমিক ভবন ঘুরে রাজু ভাস্কর্যে এসে শেষ হয়।
মিছিলে সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। এ সময় শিক্ষার্থীরা কোটা না মেধা?, মেধা মেধা, হাইকোর্টের রায় মানি না মানব না, কোটা বাতিল কর, বাতিল কর, ছাত্রসমাজ গড়বে দেশ, মেধাভিত্তিক বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধের বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই ইত্যাদি স্লোগান দেন।
সমাবেশে আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম ৪ জুলাই পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের সব ক্লাস বর্জনের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ৪ জুলাইয়ের মধ্যে আইনিভাবে আমাদের দাবির বিষয়ে চূড়ান্ত সুরাহা করতে হবে।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকদের আন্দোলনের কারণে সোমবার থেকে বন্ধ করে রাখা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গ্রন্থাগার। তবে সমাবেশ থেকে শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের কর্মবিরতির প্রতি সংহতি জানিয়ে গ্রন্থাগার খোলা রাখার দাবি জানান।
নাহিদ ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে গ্রন্থাগার খোলা থাকতে হবে। কোনো হল বন্ধ করা যাবে না, গ্রন্থাগারও বন্ধ করা যাবে না।
পরে শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্য থেকে মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে গ্রন্থাগার খোলা রাখার দাবি জানিয়ে স্মারকলিপি দেন।
কোটা বাতিলের পরিপত্র পুনর্বহালের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের অন্য দাবিগুলো হলো- পরবর্তী সময়ে সরকার কোটাব্য বস্থা নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নিতে চাইলে ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দেয়া; সংবিধান অনুযায়ী অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা, চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহারের সুযোগ বন্ধ করা, কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোয় মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দেয়া এবং দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া।
http://dlvr.it/T91cxm
0 Comments