Ticker

6/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

Responsive Advertisement

ঢাকায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও তিন হত্যা মামলা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে বিএনপি নেতাসহ তিনজনকে হত্যার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রাজধানী ঢাকার আদালতে পৃথক আরও তিনটি হত্যা মামলা হয়েছে।
বাসস জানায়, ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন আদালতে সোমবার এই তিনটি মামলা দায়ের করা হয়। এর মধ্যে দুটি মামলা ঢাকার মিরপুর মডেল থানা পুলিশকে এজাহার হিসেবে গ্রহণ এবং অন্য মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনকে তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তিন মামলায় মোট আসামির সংখ্যা ২২৮ জন। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও অনেককে আসামি করা হয়েছে।
কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে ঢাকা মহানগর উত্তরের ১১ নং ওয়ার্ড বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল্লাহ কবির খানকে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় শেখ হাসিনাসহ ৬৭ জনকে আসামি করা হয়।
সোমবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মেহেদী হাসানের আদালতে মামলাটি করেন নিহতের স্ত্রী আফসানা ইসলাম। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে মিরপুর মডেল থানা পুলিশকে মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেয়।
এই মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়া উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাঈনুল হোসেন খান নিখিল, সাবেক সংসদ সদস্য ও প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, সাবেক সংসদ সদস্য ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ মান্নান কচি ও স্বেচ্ছাসবক লীগ নেতা মেসবাউল আলম সাচ্চু।
মামলার অভিযোগে জানা যায়, গত ৪ আগস্ট মিরপুর-১০ নম্বর এলাকায় আইডিয়াল স্কুলের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে বিক্ষোভ করছিল ছাত্র জনতা। এ সময় পুলিশের গুলিতে বেশ কিছু শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন। আহত ছাত্রদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানোর সময় শেখ হাসিনার নির্দেশে পুলিশ গুলি চালালে ভুক্তভোগী আব্দুল্লাহ কবির খান নিহত হন।
এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রাজধানীর মিরপুরে লিটন হাসান লালু ওরফে হাসান নামে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় শেখ হাসিনাসহ ১৪৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।
সোমবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের আদালতে নিহত হাসানের ভাই মিলন বাদী হয়ে এ মামলা করেন। আদালত মিরপুর মডেল থানা পুলিশকে মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেয়।
মামলায় উল্লেখযোগ্য অপর আসামিরা হলেন- সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক সংসদ সদস্য মাইনুল হোসেন খান নিখিল, সাবেক সংসদ সদস্য ইলিয়াস মোল্লা, সাবেক সংসদ সদস্য কামাল আহমেদ মজুমদার, সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিআইজি হারুন-অর-রশীদ, অতিরিক্ত যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার, ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগ নেতা এস এম মান্নান (কচি)।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, গত ৪ আগস্ট দেশে মুক্তিকামী ছাত্র-জনতার ন্যায্য ও যৌক্তিক দাবিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলাকালে ভিকটিম হাসান মিছিলে অংশগ্রহণ করেন। দুপুর ২টার দিকে শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, আব্দুল্লাহ আল মামুন, হারুন-অর-রশীদ, আসাদুজ্জামান খান কামাল, বিপ্লব কুমার ও হাবিবুর রহমানের নির্দেশে অন্যান্য আসামিসহ অজ্ঞাতনামা ২শ থেকে ৩শ জন সন্ত্রাসী ছাত্র-জনতার মিছিলে গুলি চালালে হাসান গুলিবিদ্ধ হন। ৭ আগস্ট আগারগাঁও নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
অপরদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শেরেবাংলা নগর থানা এলাকায় কাঠমিস্ত্রি তারিক হোসেনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
সোমবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম ফারহা দিবা ছন্দার আদালতে তারিকের মা মোসা. ফিদুশি খাতুন মামলাটি দায়ের করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে ৩০ সেপ্টেম্বর প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়।
মামলায় অপর আসামিরা হলেন- সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, সাবেক পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিআইজি হারুন-অর-রশীদ, অতিরিক্ত যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ৫ আগস্ট সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় কর্মস্থল থেকে ফেরার পথে শেরেবাংলা নগর থানার সামনে গুলিবিদ্ধ হন তারিক হোসেন। তাকে দ্রুত পার্শ্ববর্তী শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৯ আগস্ট তিনি মারা যান।


http://dlvr.it/TC67wC

Post a Comment

0 Comments