অপসারণের ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাতে ফেরায় বিচারপতিদের জবাবদিহি নিশ্চিতের ফোরামটি পুনরুজ্জীবিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল।
রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
রোববার সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পুনর্বহাল করে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর রায়ের রিভিউ নিষ্পত্তি করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
সংবিধানের এ-সংক্রান্ত ৯৬ অনুচ্ছেদ পুরোটাই পুনর্বহাল করেছে আপিল বিভাগ। এর ফলে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা ফিরলো সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাতে।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আইন উপদেষ্টা বলেন, সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পুনরায় কার্যকর হয়েছে। এটা নিয়ে কনফিউশন ছিল, আদালতের রায়ের কারণে সেই কনফিউশন দূর হয়েছে। সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল এখন ফুললি অপারেশনাল করা যাবে।
তিনি বলেন, এই সময়ে এটার একটি বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। আমাদের হাইকোর্টে কিছু বিচারক আছেন যাদের ব্যাপারে সমাজের বিভিন্ন স্তরের প্রচুর কমপ্লেইন রয়েছে। ওনারা জুলাই গণবিপ্লবে যে পতিত ফ্যাসিস্ট শক্তি ছিল, সেই শক্তির নিপীড়ক যন্ত্রে পরিণত হয়েছিলেন। কারও কারও বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আছে।
আসিফ নজরুল আরও বলেন, পত্রপত্রিকায় রিপোর্ট ছাপা হয়েছে। এজন্য ছাত্র-জনতার অনেকের ক্ষোভ রয়েছে। এখন এসব ক্ষোভ সাংবিধানিকভাবে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমে নিষ্পত্তির পথ খুলে গেছে।
উচ্চ আদালত সম্পূর্ণ স্বাধীন জানিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, উচ্চ আদালত তাদের মতো করে ব্যবস্থা নেবে। ছাত্র-জনতা এটিকে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে উপস্থাপন করার জন্য একটি ফোরাম পেল। আমরা এটিকে ইতিবাচকভাবে দেখতে চাই।
সংবিধান অনুযায়ী সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করা আছে জানিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, প্রধান বিচারপতি ও আপিল বিভাগের সবচেয়ে সিনিয়র বিচারপতিকে নিয়ে এই কাউন্সিল গঠিত হয়। আজকেই যদি কেউ কমপ্লেইন দেয়, তবে সেই প্রসেস শুরু করে দেবে। আলাদা করে নোটিফিকেশন দেয়ার দরকার নেই, এটি সংবিধানে বলাই আছে।
তিনি আরও বলেন, সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল যখন বাদ ছিল, তখন উচ্চ আদালতের বিচারকদের জবাবদিহি নিশ্চিত করার কোনো ফোরাম ছিল না। জবাবদিহি নিশ্চিত করার মতো ইচ্ছাও তৎকালীন উচ্চ আদালতের প্রশাসনের মধ্যে ছিল না। কারণ ওনাদের ফরমায়েশি রায় হচ্ছিল।
আইন উপদেষ্টা বলেন, আপনারা জানেন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কী রকম রায় হয়েছে, তারেক রহমানকে বাংলাদেশে কথাই বলতে দেবে না। এরকম বাক-স্বাধীনতা রুদ্ধকারী রায় হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বহু মানুষ মানবাধিকার রক্ষার সুযোগ পাননি; বরং নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। বিচারকদের জবাবদিহি নিশ্চিত করার মতো সদিচ্ছা এখন যারা প্রশাসনে আছেন, তাদের আছে বলেই আমি বিশ্বাস করি। আর এই সদিচ্ছা বাস্তবায়নের ফোরামটাও পুনরুজ্জীবিত হয়েছে বা সক্রিয় হয়েছে।
http://dlvr.it/TFXJ8h
0 Comments