Ticker

6/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

Responsive Advertisement

বড় মাছের ‘টোপ’ দিয়ে ২৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নিলেন চেয়ারম্যান

দিঘিতে নেই দুই কেজি ওজনের মাছ, অথচ মাইকিং করা হয়েছে ১৮ কেজির মাছ রয়েছে। জেলা প্রশাসক টিকিটের মূল্য সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করে দিলেও দিঘির মালিক নিয়েছেন ৪০ হাজার টাকা করে। কিন্তু দুই দিনেও ২ কেজি ওজনের মাছও তুলতে না পেরে ইউপি চেয়ারম্যানের কারসাজি বুঝতে পারেন মৎস্য শিকারীরা। পরে প্রতারণার অভিযোগ এনে চেয়ারম্যানের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা। তবে এরই মধ্যে মৎস্য শিকারীদের কাছ থেকে ২৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন চেয়ারম্যান। নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নে ঘটেছে এ ঘটনা। ইউনিয়নের বড়মুল্লক গ্রামে প্রায় ৪৫ বিঘা আয়তনের দিঘি রয়েছে ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম বাবুর। জানা গেছে, দিঘিতে টিকিট কেটে বড়শি দিয়ে মাছ শিকারের জন্য সম্প্রতি এলাকায় মাইকিং করেন বাবু চেয়ারম্যান। মাইকিংয়ে দিঘিতে বড় ও পর্যাপ্ত মাছ আছে বলে মৎস্য শিকারীদের আকৃষ্ট করা হয়। দেশের বিভিন্ন স্থানে এ বিষয়ে চালানো হয় প্রচার। ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লক্ষাধিক টাকা খরচ করে মাছ ধরতে আসেন মৎস্য শিকারীরা। নির্দিষ্ট দিনে দিঘির চারপাশে বসে ৫৮টি চৌকি। প্রতিটি চৌকির টিকিটের দাম নির্ধারণ করা হয় ৪০ হাজার টাকা। তবে বৃহস্পতিবার বিকেলে মাছ শিকারে বসার ২০ ঘণ্টায়ও কারও বড়শিতে ওঠেনি বড় কোনো মাছ। এক-দেড় কেজির চেয়ে বেশি ওজনের মাছ না ওঠায় সন্দেহ হয় বিরাট অংকের অর্থ পরিশোধ করা মৎস্য শিকারীদের। পরে ক্ষুব্ধ হয়ে শুক্রবার প্রতারণার অভিযোগ তুলেছেন তারা। এদিকে নওগাঁর জেলা প্রশাসকের (ডিসি) সঙ্গে নিউজবাংলা যোগাযোগ করলে বেরিয়ে আসে অন্যরকম তথ্য। জেলা প্রশাসক গোলাম মাওলা বলেন, টিকিট কেটে মাছ শিকারের জন্য আবেদন করেছিলেন দিঘির মালিক। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে দিঘিতে মাছ আছে কি না, পরীক্ষা করতে লোক পাঠানো হয়। কিন্তু জাল টেনে দিঘিটিতে সন্তোসজনক মাছ দেখতে পাওয়া যায়নি। তিনি আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে টিকিট কেটে মাছ ধরার অনুমতি দেয়া হয়নি। কিন্তু দিঘির মালিক ও মৎস্য শিকারী বলে পরিচয় দেয়া কয়েকজনের জোর আবেদনের প্রেক্ষিতে পরে টিকিটের মূল্য সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করে অনুমতি দেয়া হয়। এ ব্যাপারে মান্দা উপজেলার সৌখিন মাছ শিকারী শাহিন বলেন, ৪০ হাজার টাকা দিয়ে টিকিট কেটে গতকাল বিকেল থেকে বড়শি ফেলে বসে আছি। ২০ ঘণ্টায়ও কেউ বড় একটা মাছ শিকার করতে পারল না। বড় মাছ তো দূরের কথা, দুই কেজি ওজনের মাছও কারও বড়শিতে ওঠেনি। অথচ দিঘির মালিক বলেছিলেন, দিঘিতে সর্বনিম্ন ৩ কেজি ওজনের রুই, কাতলা, গ্রাসকার্প রয়েছে। সর্বোচ্চ ১৮ কেজি পর্যন্ত মাছ রয়েছে দিঘিটিতে। অথচ এখন পর্যন্ত যেসব মাছ ধরা পড়েছে, সেগুলোর ওজন আড়াইশ গ্রাম থেকে এক কেজির মধ্যে। প্রলুব্ধ করে মৎস্য শিকারীদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে বলে দাবি তার। এ ঘটনার জন্য চেয়ারম্যানের শাস্তি চেয়েছেন শাহিন। অপর মাছ শিকারী সাপাহার উপজেলা আব্দুল হালিম বলেন, মাছ ধরা না ধরা কোনো বিষয় নয়। কিন্তু মাছের ওজন নিয়ে শিকারীদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন দিঘির মালিক আশরাফুল চেয়ারম্যান। এখন পর্যন্ত ৩ কেজি ওজনের একটি মাছও যদি কেউ শিকার করতে পারতেন, তাহলেও বুঝতাম দিঘিতে বড় মাছ আছে। অর্থ হাতিয়ে নিতে দিঘিতে ছোট মাছ ছেড়ে প্রতারণা করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে সৌখিন মৎস্য শিকারীরা টিকিট কেটে শিকারে অংশ নিয়েছেন। টিকিট খরচসহ প্রতিটি চৌকিতে ৮০ হাজার থেকে লক্ষাধিক টাকা পর্যন্ত খরচ হয়েছে। এ ঘটনায় প্রতারকদের বিচার চাই আমরা। মৎস্য শিকারীদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে দিঘির মালিক চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম বাবুর সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হয়। সাংবাদিক পরিচয় দেয়া হলে ফোন কাটতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি। এসময় তিনি জেলা প্রশাসকের অনুমতি নিয়েই লটারি ছাড়া হয়েছে বলে জানান। তবে এর চেয়ে বেশি আর কোন মন্তব্য করতে তিনি রাজি হননি।
http://dlvr.it/SvqRxw

Post a Comment

0 Comments