Ticker

6/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

Responsive Advertisement

জাতির পিতার জন্মদিন রোববার

স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৫তম জন্মবার্ষিকী ১৭ মার্চ, রোববার। ১৯২০ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। এই মহানায়কের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রতি বছর রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে দিনটি উদযাপন করা হয়।
দিবসটি উদযাপনে দেশের সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সব সরকারি-বেসরকারি ভবন এবং বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে।
বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠন এবং বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি নিয়েছে। আওয়ামী লীগ নিয়েছে দুদিনব্যাপী কর্মসূচি, যা ঢাকার পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর জন্মস্থান এবং সমাধিসৌধ টুঙ্গিপাড়া কমপ্লেক্সে পালন করবে।
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় শেখ পরিবারে শেখ লুৎফর রহমান ও শেখ সায়েরা খাতুন দম্পতির ঘরে জন্ম নেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। লুৎফর-সায়েরা দম্পতির ছোট্ট খোকাই পরবর্তীতে এদেশের মানুষকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্তির ত্রাতা হিসেবে আবির্ভূত হন।
বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্কুলজীবনেই রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। কৈশোরে গোপালগঞ্জ মিশন স্কুলে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র থাকার সময় ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে যোগদানের কারণে প্রথমবারের মতো কারাবরণ করেন তিনি। ম্যাট্রিক পাসের পর কলকাতা ইসলামিয়া কলেজে অধ্যয়নকালে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও আবুল হাশিমের মতো রাজনৈতিক নেতাদের সান্নিধ্যে আসেন। এই নেতাদের সাহচর্যে থেকে তিনি নিজেকে ছাত্র-যুবনেতা হিসেবে রাজনীতির অঙ্গনে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন।
১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসন থেকে স্বাধীনতালাভের পর পরই ঢাকায় ফিরে নতুন রাজনৈতিক চিন্তা-চেতনা নিয়ে অগ্রসর হন বঙ্গবন্ধু। সহকর্মীদের নিয়ে ১৯৪৮ সালে গঠন করেন ছাত্রলীগ। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন তৎকালীন ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের প্রথম বিরোধী দল আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠিত হলে তরুণ নেতা শেখ মুজিব দলটির যুগ্ম সম্পাদক পদ পান।
বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, আটান্নর আইয়ুব খানের সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলনসহ পাকিস্তানি সামরিক শাসনবিরোধী সব আন্দোলন-সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন বঙ্গবন্ধু। তিনি ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট সরকারের মন্ত্রিসভায় স্থান পান।
আওয়ামী লীগ প্রধান হিসেবে ১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি লাহোরে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসন তথা বাঙালির মুক্তির সনদ ঐতিহাসিক ছয় দফা ঘোষণা করেন বঙ্গবন্ধু। পাকিস্তানের স্বৈরশাসক জেনারেল আইয়ুব খান বঙ্গবন্ধুসহ নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের নামে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা করে তাদের কারাগারে পাঠায়।
ঊনসত্তরের ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বাঙালি শেখ মুজিবকে কারামুক্ত করে। এ সময়ে শেখ মুজিবকে বঙ্গবন্ধু উপাধি দিয়ে সম্মানিত করা হয়।
১৯৭০ সালের নির্বাচনে পাকিস্তানের একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে বিজয়ী হয় আওয়ামী লীগ। কিন্তু পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী নানা চক্রান্ত করে বঙ্গবন্ধুর হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করেনি। বঙ্গবন্ধু স্বায়ত্তশাসনের আন্দোলনকে প্রথমে স্বাধিকার আন্দোলন এবং চূড়ান্তপর্বে স্বাধীনতার আন্দোলনে রূপ দেন।
শুরু হয় অসহযোগ আন্দোলন। ৭ মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানের (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) জনসমুদ্রে ঐতিহাসিক ভাষণে তিনি বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করেন, এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। এরই ধারাবাহিকতায় ২৬ মার্চে তার স্বাধীনতার ঘোষণার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধের মধ্য দিয়ে দেশ স্বাধীন হয়।
স্বাধীন দেশে বঙ্গবন্ধু বেশিদিন দেশ গঠনের কাজ করে যেতে পারেননি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে নিজ বাসভবনে ক্ষমতালোভী ঘাতকদের হাতে সপরিবারে নিহত হন তিনি। স্বাধীনতা অর্জনের মাত্র সাড়ে তিন বছরের মধ্যে জীবনাবসান ঘটে মহানায়কের।
বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে আওয়ামী লীগের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- ১৭ মার্চ সকাল সাড়ে ১০টায় টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা অর্পণ।
এরপর আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে দলের নেতাদের নিয়ে আরেকবার শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শ্রদ্ধা জানানো শেষে সেখানে মিলাদ মাহফিল এবং একটি শিশু-কিশোর সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
১৯ মার্চ বিকেলে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে আলোচনা সভা।
এছাড়া ১৭ মার্চ সকাল সাড়ে ৯টায় ঢাকায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এবং সারাদেশের সব কার্যালয়ে পতাকা উত্তোলন করা হবে। সেদিন সকাল ৭টায় ঢাকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবে আওয়ামী লীগ।
এছাড়া জাতির জনকের জন্মদিনে তার জন্য সব ধর্মীয় উপাসনালয়ে প্রার্থনা করা হবে। দেশব্যাপী বিশেষ প্রার্থনা কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাদ জোহর বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদসহ দেশের সব মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।
সন্ধ্যা ৬টায় মিরপুর ব্যাপ্টিস্ট চার্চে (৩/৭-এ সেনপাড়া, পবর্তা, মিরপুর-১০) খ্রীষ্টান সম্প্রদায়, একই সময়ে রাজধানীর মেরুল বাড্ডা আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে বৌদ্ধ সম্প্রদায়, সকাল ১০টায় সবুজবাগ ধর্মরাজিক বৌদ্ধ মহাবিহার এবং সকাল সাড়ে ১১টায় ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে হিন্দু সম্প্রদায় প্রার্থনা সভার আয়োজন করেছে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দলের নেতাকর্মীসহ দেশবাসীকে জাতির জনকের জন্মদিন পালনের আহ্বান জানিয়েছেন।


http://dlvr.it/T49GKl

Post a Comment

0 Comments