কোরবানির ছাগল-কাণ্ডে ভাইরাল হওয়া জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক কর্মকর্তা মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব এবং বেনিফিশিয়ারি ওনার অ্যাকাউন্ট (বিও হিসাব) জব্দের নির্দেশ দিয়েছে সংশ্লিষ্ট দুটি প্রতিষ্ঠান।
মঙ্গলবার মতিউর, তার দুই স্ত্রী ও সন্তান এবং তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
এর আগে এদিন মতিউর ও তার পরিবারের সদস্যদের বিও হিসাব জব্দ করতে সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডকে নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
বিএফআইইউর ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানান, মতিউর ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব ৩০ দিনের জন্য জব্দ করতে সব ব্যাংককে চিঠি দেয়া হয়েছে। ব্যাংক হিসাবের সব তথ্য পাওয়ার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বিএফআইইউ মতিউর রহমান, তার প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ, প্রথম পক্ষের সন্তান ফারজানা রহমান ইপ্সিতা ও আহমেদ তৌফিকুর রহমান অর্ণব, দ্বিতীয় স্ত্রী শাম্মী আক্তার শিবলী; দ্বিতীয় পক্ষের সন্তান ইফতেমা রহমান মাধবী, মুশফিকুর রহমান ইফাত ও ইরফানুর রহমান ইরফানের ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দিয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে বিএফআইইউ দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে চিঠি পাঠিয়ে এ নির্দেশনা দেয়।
এছাড়া আগামী পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে এসব অ্যাকাউন্টের হিসাব খোলার ফরম, কেওয়াইসি, লেনদেন বিবরণী ইত্যাদি তথ্য সরবরাহের নির্দেশ দেয়া হয়েছে ব্যাংকগুলোকে।
অভিযোগ রয়েছে, মতিউর বছরের পর বছর ধরে রাজস্ব কার্যালয়ে তার ঊর্ধ্বতন পদের অপব্যবহার করে আর্থিক ও রিয়েল এস্টেট সম্পদসহ কয়েক শ কোটি টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দ্বিতীয় পক্ষের সন্তান ইফাত ১৫ লাখ টাকা খরচ করে গত ঈদুল আজহার সময় একটি ছাগল কেনার পরে দেশজুড়ে আলোচনায় আসেন মতিউর রহমান।
৪ জুন তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্ত শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তদন্তে দেখা যায়, পুবাইলে মতিউর রহমানের নামে ৫৫ বিঘা জমি, একটি পার্ক, আরও ৩০০ বিঘা জমি, একটি জুতার কারখানা, দামি গাড়ি এবং তার ও তার আত্মীয়-স্বজনের নামে বাড়ি রয়েছে।
এর আগে সোমবার (২৪ জুন) ঢাকার একটি আদালত মতিউর রহমান, তার প্রথম স্ত্রী এবং তাদের সন্তানের বিরুদ্ধে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
একই দিন মতিউরকে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের পরিচালক পদ থেকে অপসারণের জন্য সোনালী ব্যাংক ও বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়।
এর আগে তাকে এনবিআর কাস্টমস, এক্সাইজ অ্যান্ড ভ্যাট আপিলাত ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্টের পদ থেকে অপসারণ করা হয়।
http://dlvr.it/T8lRW0
0 Comments