সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যার ঘটনায় মাস্টারমাইন্ড আক্তারুজ্জামান শাহীনকে ফেরাতে ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
নেপালের কাঠমান্ডু থেকে মঙ্গলবার দেশে ফিরে ঢাকায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
ডিএমপি ডিবি প্রধান বলেন, আনার হত্যাকাণ্ডের পর তাৎক্ষণিকভাবে এনসিবির মাধ্যমে তথ্য-উপাত্তসহ যুক্তরাষ্ট্রকে চিঠি দিয়েছি। শাহীন যেহেতু যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক তাই আমরা ইন্টারপোলকেও অবহিত করেছি।
শাহীনকে ফেরাতে বাংলাদেশে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসে গিয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে মিটিং করব। তাকে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করব।
তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বন্দি বিনিময় চুক্তি রয়েছে। ভারতও শাহীনকে ফেরাতে ভূমিকা রাখবে। কারণ ভারতের কাছে শাহীন একজন মোস্ট ওয়ান্টেড আসামি।
নেপালে গিয়ে তদন্তের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি হারুন অর রশীদ বলেন, বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন সময় অপরাধ করে নেপালে চলে যায় অনেকে। আবার ভারত থেকে অনেক বাংলাদেশি অপরাধী নেপালে চলে যায়। রুট হিসেবে অনেক অপরাধী নেপালকে ব্যবহার করে।
আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড আক্তারুজ্জামান শাহীনও ভারত থেকে নেপালের কাঠমান্ডুতে গিয়ে অবস্থান করে। শাহীনের সহযোগী সিয়ামও কাঠমান্ডুতে গিয়ে আত্মগোপন করে।
সিয়াম কাঠমান্ডুতে অবস্থান করছে এমন খবর পেয়ে বাংলাদেশ পুলিশ সদর দফতরের এনসিবি শাখা থেকে নেপালের এনসিবিতে চিঠি পাঠানো হয়। আমাদের তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে সিয়ামকে কাঠমান্ডু পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।
ডিবিপ্রধান বলেন, কাঠমান্ডুর বিভিন্ন স্তরের পুলিশের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন অপরাধী কাঠমান্ডুতে গিয়ে আত্মগোপন করে থাকে সেটিও তাদের বলে এসেছি। আমি মনে করি, নেপাল পুলিশ ও বাংলাদেশ পুলিশের আন্তরিকতা আরও বাড়বে।
বাংলাদেশি অপরাধীরা নেপালের কাঠমান্ডুতে গিয়ে সেফ হোম বানাবে এটি আর হবে না; এই বার্তা কাঠমান্ডু পুলিশ পেয়েছে।
তিনি বলেন, কাঠমান্ডু পুলিশ আমাদের আনঅফিসিয়ালি জানিয়েছে যে তারা সিয়ামকে গ্রেপ্তার করেছে।
সিয়ামকে ফেরত আনার বিষয়ে কোনো জটিলতা আছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে হারুন বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে নেপালের বন্দি বিনিময় চুক্তি নেই। তবে এ বিষয়েও আমরা কাঠমান্ডু পুলিশের সঙ্গে কথা বলেছি। সিয়াম ভারতের পুলিশের কাছে মোস্ট ওয়ান্টেড। ভারতের সঙ্গে নেপালের বন্দি বিনিময় চুক্তি রয়েছে। নেপাল যদি ভারত কিংবা বাংলাদেশের কাছে সিয়ামকে হস্তান্তর করে তবে তদন্তে কোনো সমস্যা হবে না।
তিনি বলেন, যদি একই অপরাধের ক্ষেত্রে দুটি দেশ দাবি করে তবে হোস্ট কান্ট্রি হিসেবে নেপাল বিবেচনায় আনবে অপরাধের ধরনটা কী এবং হত্যার ঘটনাটি কোথায় সংঘটিত হয়েছে। নেপাল বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে যে সিয়ামকে কোন দেশের কাছে হস্তান্তর করবে।
হারুন অর রশীদ বলেন, ভারত আমাদের বন্ধুপ্রতীম রাষ্ট্র। দুই দেশের উদ্দেশ্যও এক ও অভিন্ন। বিভিন্ন তথ্য আদানপ্রদান করছি ভারতের সঙ্গে। দুই দেশের তদন্ত কর্মকর্তারা কাজ করছেন এমপি আনার হত্যাকাণ্ড নিয়ে।
সিয়ামকে ভারতের পুলিশের কাছে দিলে আমাদের তদন্তে কোনো সমস্যা হবে না। মাস্টারমাইন্ড আক্তারুজ্জামান শাহীনের ঘনিষ্ঠ ও কাছের মানুষ হিসেবে পরিচিত সিয়াম। সিয়ামকে ভারতীয় পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হলে আলামত উদ্ধারের ক্ষেত্রে সে ভালো ভূমিকা রাখতে পারবে। আমরাও তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারব।
এমপি আনার হত্যা মামলার তদারকি কর্মকর্তা শাহিদুর রহমানকে সম্প্রতি হঠাৎ বদলি করা হয়েছে। এতে তদন্তের ক্ষেত্রে কএনা সমস্যা হবে কিনা জানতে চাইলে হারুন বলেন, বদলির বিষয়টি আমাদের পার্ট নয়। এটি পুলিশ সদর দফতরের একটি রুটিন ওয়ার্ক।
মরদেহের খণ্ডাংশ উদ্ধারের বিষয়ে তিনি বলেন, এমপি আনারের পরিবার যাবে কলকাতায়। এরপর ডিএনএ নমুনা টেস্ট করার পর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।
http://dlvr.it/T7q7c5
0 Comments