রিপাবলিকান সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে প্রথম নির্বাচনি বিতর্কে হতাশাজনক পারফরর্ম করলেও যুক্তরাষ্ট্রে ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে ডেমোক্র্যাট দাতাদের আশ্বস্ত করেছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
নিউ ইয়র্ক ও নিউ জার্সিতে শনিবার নির্বাচনি তহবিল সংগ্রহের কয়েকটি অনুষ্ঠানে দাতাদের এই আশ্বাস দেন বাইডেন। আটলান্টায় সিএনএনের স্টুডিওতে অংশ নেয়া প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কে নিজের পারফরমেন্স নিয়েও কথা বলেন তিনি।
এর আগে বৃহস্পতিবার একটি অনুষ্ঠানে কথা বলতে গিয়ে বাইডেন স্বীকার করেন যে তিনি বিতর্কে ভাল করতে পারেননি। কিন্তু ট্রাম্পও যে ভাল করেননি সেটিও তিনি স্মরণ করিয়ে দেন। বাইডেন বলেন, আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, আপনারাই এই নির্বাচনে জিতবেন।
পুনরায় নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে সমর্থকদের আস্থার সংকট দূর করতে বাইডেন তহবিল সংগ্রহ অনুষ্ঠানগুলোতে তার জয়ের প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
তহবিল সংগ্রহ অনুষ্ঠানগুলো এমন সময়ে আয়োজিত হচ্ছে যখন রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাম্পের বিপক্ষে বাইডেনের দুর্বল পারফর্মেন্সের পর দুশ্চিন্তায় থাকা ডেমোক্র্যাটিক দাতারা তাদের হতাশা প্রকাশ করছেন।
এক ডজনেরও বেশি ডেমোক্র্যাটিক দাতার সাক্ষাৎকার নেয়ার পর রয়টার্স তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, তারা এখন নির্বাচনের আগ মুহূর্তে নতুন করে পরিবর্তনের কথাও ভাবছেন।
বাইডেন ও ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেন হেজ-ফান্ড বিলিয়নেয়ার ব্যারি রোজেনস্টেইন আয়োজিত এক তহবিল সংগ্রহ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে নিউ ইয়র্কের একটি বিচের ছিটমহল ভ্রমণ করেন। এরপর ওইদিনই নিউ জার্সিতে রাজ্যের গভর্নর ফিল মারফি আয়োজিত আরেকটি তহবিল সংগ্রহ আয়োজনে যোগ দিয়েছেন বাইডেন।
হ্যাম্পটনে প্রায় একশ সমর্থকের উপস্থিতিতে বাইডেন বলেন, আমি বিতর্ক নিয়ে আপনাদের উদ্বেগের বিষয়টি বুঝতে পারছি। রাতটি আমার জন্য খুব ভালো ছিল না। আসল কথা হলো রাতটি আমার মতো ট্রাম্পের জন্যও ভালো যায়নি।
আমি আপনাদেরকে প্রতিশ্রতি দিচ্ছি যে আমরাই এই নির্বাচনে জয়লাভ করব।
রয়টার্স জানায়, নিউ ইয়র্কের ইভেন্টে আয়োজকদের তালিকায় রোজেনস্টেইন ছাড়াও ছিলেন হেজ-ফান্ডের প্রতিষ্ঠাতা এরিক মিনডিক, তার স্ত্রী স্টেসি, সেলিব্রিটি দম্পতি সারাহ জেসিকা পার্কার ও ম্যাথু ব্রডারিক এবং অভিনেতা মাইকেল জে ফক্স।
বাইডেনের নির্বাচনি প্রচারণা শিবির শনিবার গর্বের সঙ্গে জানিয়েছে, তারা বিতর্ক আয়োজনের দিন থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৭ মিলিয়ন ডলারের বেশি তহবিল সংগ্রহ করেছে। তবে এখনও ডেমোক্র্যাট দাতা ও সমর্থক সবার মনেই এই প্রশ্নটি ঘুরপাক খাচ্ছে- বিতর্কে বাইডেনের পারফর্মেন্স স্বল্প মেয়াদে হলেও তার তহবিল সংগ্রহের ব্যাপারটিকে বাধাগ্রস্ত করবে কিনা।
অল্প কয়েক মাস আগেও ট্রাম্পের চেয়ে তহবিল সংগ্রহের দিক থেকে প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলার এগিয়ে ছিলেন বাইডেন। তবে জুন মাসে যেখানে বাইডেনের প্রচারণা শিবিরের সংগৃহীত তহবিলের পরিমাণ ছিল ২১২ মিলিয়ন ডলার সেখানে ২৩৫ মিলিয়ন ডলারের তহবিল নিয়ে এগিয়ে ছিল ট্রাম্পের প্রচারণা শিবির।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডেমোক্র্যাটদের দুটি সূত্র জানিয়েছে, আগস্টে ডেমোক্র্যাটিক ন্যাশনাল কনভেনশনের সময় বা এর আগে বাইডেনকে কীভাবে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে নির্বাচনের দৌড় থেকে সরিয়ে দেয়া যায় সে সম্পর্কিত নিয়মনীতিগুলো সম্পর্কে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে অনুসন্ধান চালিয়েছেন ডেমোক্র্যাটদের শীর্ষ দাতাদের বেশ কয়েকজন। এমনকি বাইডেনকে নির্বাচন থেকে সরে যেতে রাজি করানোর জন্য ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেনের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছেন তাদের অনেকে।
লিংকডইন এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও ডেমোক্র্যাটদের অন্যতম শীর্ষ একজন দাতা রিড হফম্যান এ প্রসঙ্গে বলেন, গত রাতে বিতর্কে তার হতাশাজনক পারফর্মেন্সের পর নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে বাইডেনকে চাপ প্রয়োগ করার জন্য কোনো পাবলিক ক্যাম্পেইনের আয়োজন করা হবে কিনা- এ সংক্রান্ত প্রশ্ন নিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আমি অনেক ই-মেইল পেয়েছি। তার বিতর্কের পারফর্মেন্স অবশ্যই দাতা ও সংগঠকদেরকে বড় একটি ধাক্কা দিয়েছে।
এ নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিষয়টি এখন বাইডেন ও তার পরিবারের ওপরই নির্ভর করছে।
http://dlvr.it/T8zNKl
0 Comments