কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার আশ্রয় শিবিরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে তিন রোহিঙ্গাকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। সোমবার ভোরের এই ঘটনায় গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছে আরও সাতজন।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তায় নিয়োজিত এপিবিএন ও থানা পুলিশ বলছে, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মিয়ানমারের সন্ত্রাসী সংগঠন আরসার সদস্যরা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। হতাহতরা আরএসও সদস্য।
সোমবার ভোরে উখিয়ার মধুরছড়া ৪-এক্সটেনশন নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে বলে জানিয়েছেন ১৪ এপিবিএনের অধিনায়ক মোহাম্মদ ইকবাল।
নিহতরা হলেন- উখিয়ার মধুরছড়া ৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের জাফর আহমেদের ছেলে মো. ইলিয়াছ, মৃত আবদুর রকিমের ছেলে মো. ইছহাক এবং ৩ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মো. ইসমাইলের ছেলে ফিরোজ খান।
এ ঘটনায় আহতদের মধ্যে তিনজনের নাম-পরিচয় জানা গেছে। তারা হলেন- ৪ নম্বর ক্যাম্পের মো. হাছানের ছেলে আব্দুল হক, নজির আহমদের ছেলে আব্দুস শুক্কুর ও মৃত ওমর মিয়ার ছেলে আব্দুল মোনাফ।
আহত অপর চারজনের নাম-পরিচয় জানাতে পারেনি এপিবিএন। তাদেরকে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল ও উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন এনজিও হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
১৪ এপিবিএনের অধিনায়ক মোহাম্মদ ইকবাল বলেন, ভোরে ৪০-৪৫ জন আরসা সন্ত্রাসী পাহাড় থেকে সীমানা কাঁটাতারের বেড়া অতিক্রম করে ৪ নম্বর ক্যাম্পে প্রবেশ করে। ঘটনাস্থলে এসে ক্যাম্পে পাহারারত রোহিঙ্গা ইলিয়াছকে গুলি করে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে হাত, পা ও তলপেটে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। এতে ইলিয়াস ঘটনাস্থলেই মারা যান।
এ খবর শুনে ক্যাম্পের অন্য রোহিঙ্গারা এগিয়ে গেলে সন্ত্রাসীরা তাদের লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। এতে ছয়জন আহত হন। তাদেরকে উদ্ধার করে কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন এমএসএফ হাসপাতালে নেয়ার পর নিয়ে আসে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও দুজন মারা যান।
এপিবিএন পুলিশের এই অধিনায়ক বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে এপিবিএন সদস্যদের লক্ষ্য করেও গুলিবর্ষণ করে সন্ত্রাসীরা। সরকারি সম্পত্তি ও জানমাল রক্ষার্থে পুলিশও সন্ত্রাসীদের লক্ষ্য করে পাল্টা শর্টগানের ১৬ রাউন্ড লেডবল কার্তুজ ফায়ার করে। এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।
ইকবাল জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নতুন করে সংগঠিত এবং নাশকতার চেষ্টা করছে আরসা। মূলত আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘবদ্ধ হয়ে হামলা চালায় আরসা সন্ত্রাসীরা। এতে তারা গুলি এবং কুপিয়ে তিনজন রোহিঙ্গাকে হত্যা করে। গুরুতর আহত হয়েছে ৭ জন। হতাহতরা আরএসও সদস্য বলে জানা গেছে।
উখিয়া থানার পরিদর্শক মো. শামীম হোসেন বলেন, নিহত তিন রোহিঙ্গার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
http://dlvr.it/T84NLt
0 Comments