পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ায় ধূপখোলা খেলার মাঠটি ফিরে পেয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি)। এখন থেকে মাঠটির নাম হবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ।
রোববার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. হুমায়ুন কবির চৌধুরীকে মাঠটি বুঝিয়ে দেন ঢাকার জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, সাধারণ শিক্ষার্থীরাসহ জেলা প্রশাসন অফিসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান বলেন, আমি প্রথমে আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি এই ঐতিহাসিক মুহূর্তে আমাদের প্রখ্যাত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীর উদ্যোগকে। দীর্ঘদিন ধরে আমাদের সরকারি খাস জমির এই মাঠ বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবহার করতে পারছিল না। পুনর্দখলের মাধ্যমে আজকে ঐতিহাসিক যাত্রা শুরু হলো। সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলব, এখানে একটি স্থায়ী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইনবোর্ড সেঁটে দেয়ার জন্য।
ঢাকার জেলা প্রশাসক রোববার ধূপখোলা খেলার মাঠটি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেন। ছবি: নিউজবাংলা
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, এখানে মোট ৫ দশমিক ৩২ একর জায়গা রয়েছে। তার মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে ৪ দশমিক ৫০ একর জায়গা বুঝিয়ে দেয়া হলো। বাকি যে জায়গাটা রয়েছে সেটা মূল মাঠের পাশে, যা ইস্টার্ন ক্লাব দখল করে রেখেছে। তাদের সঙ্গে কথা বলে সেটুকুর ব্যবস্থা নেব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. হুমায়ুন কবির চৌধুরী বলেন, মাঠটিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা করত। কিন্তু কী কারণে সেটা বেহাত হয়ে গিয়েছিল সে কারণ আমি আজও খুঁজে পাই না। শিক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসককে মাঠটির বিষয়ে জানালে প্রশাসন আজ মাঠটি বুঝিয়ে দিল।
আজ থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় মাঠটি ব্যবহারের সুযোগ পাওয়ায় ঢাকার জেলা প্রশাসককে ধন্যবাদ জানাই। পাশাপাশি যেসব শিক্ষার্থী এই উদ্যোগ নিয়েছে তাদেরও ধন্যবাদ জানাই। আমরা দ্রুত এখানে একটি টুর্নামেন্টের আয়োজন করব।
প্রসঙ্গত, গত ২০২১ সালের জুনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে মার্কেট নির্মাণের উদ্যোগ নেয় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৭ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে মার্কেট নির্মাণের শঙ্কায় ডিএসসিসিকে চিঠি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরে সিটি মেয়রের সঙ্গে দেখা করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে কোনো স্থাপনা নির্মাণ না করার আশ্বাস দেয়া হয়। সে সময় খেলার মাঠ থেকে খুঁটি সরিয়ে নেয়া হয়। কিন্তু ২ অক্টোবর গভীর রাতে আবার পুরো মাঠ ঘিরে রাখা হয়। মাঠের গোলপোস্ট ও সীমানা প্রাচীরগুলো তুলে ফেলে সিটি করপোরেশনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। পরবর্তীতে ২০২৩ সালের ১১ অক্টোবর ধূপখোলা মাঠটি আধুনিকায়ন করে উদ্বোধন করেন ফজলে নূর তাপস।
১৯৮৪ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার নিজস্ব কোনো মাঠ না থাকায় ধূপখোলা খেলার মাঠটি তিন ভাগ করেন। এক ভাগ তৎকালীন সরকারি জগন্নাথ কলেজকে ব্যবহারের জন্য মৌখিকভাবে অনুমতি দেয়া হয়। তখন থেকেই প্রতিষ্ঠানটির খেলার মাঠ হিসেবে ধূপখোলা মাঠটি ব্যবহার করছে। এই মাঠেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
http://dlvr.it/TC440s
0 Comments