নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্রুত আলোচনার ব্যবস্থা করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম।
তিনি বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের অনেক প্রত্যাশা। আমরা বিশ্বাস করি, তারা একটি যুক্তিসংগত সময়ের মধ্যে নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে। এই সরকারের প্রতি আমাদের আস্থা আছে, জনগণের আস্থা আছে। তবে অবশ্যই এটা (নির্বাচন) সীমিত সময়ের মধ্যে, একটি যুক্তিসঙ্গত সময়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত।
শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ভাসানী অনুসারী পরিষদ আয়োজিত স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফর আহমেদের নবম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই স্মরণ সভার আয়োজন করা হয়।
নির্বাচনের পাশাপাশি দ্রুত অন্তর্বর্তী সরকারকে সংস্কারের রোডম্যাপ ঘোষণার আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, অন্তর্বর্তী সরকারে যারা কাজ করছেন, তারা সবাই আন্তরিক ও যোগ্য লোক। তবে আমরা চাই এই কাজ দৃশ্যমান ও স্বচ্ছ হোক। আমরা দেখতে চাই, প্রধান উপদেষ্টা যা করতে চান তার পরিকল্পনা জনগণের সামনে উপস্থাপন করছেন। তিনি কীভাবে দ্রুত নির্বাচন আয়োজনের জন্য কাজ করছেন, কীভাবে তিনি প্রয়োজনীয় সংস্কার আনবেন, তার একটি রোডম্যাপ উপস্থাপন করা উচিত।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে রাষ্ট্রীয় সংস্কার করতে হবে। এখন পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এজেন্ডাভিত্তিক কোনো আলোচনা করেনি। কয়েকজন মিলে সংস্কারের উদ্যোগ নিলে তা কার্যকর হবে না। কারণ এ জন্য জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি দরকার। আমি বিশ্বাস করি না যে কিছু লোক সংস্কার করতে পারে। আমি বিশ্বাস করি, জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে সংস্কার হওয়া উচিত।
তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কোনো ভাইস চ্যান্সেলর নিয়োগ দেওয়া হয়নি। অথচ আগের ভাইস চ্যান্সেলররা অনেকেই পদত্যাগ করেছেন। আমরা দেখতে চাই, ভাইস চ্যান্সেলর যাদের নিয়োগ দেয়া হচ্ছে, তাদের সবার কাছে গ্রহণযোগ্যতা আছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ফ্যাসিবাদের নায়ক, স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছেন। তবে তাদের দোসরদের কেউ পালিয়ে গেছে এবং অনেকে লুকিয়ে রয়েছে। যেসব ব্যক্তিবর্গ হাসিনার পাশে থেকে তার দোসরের ভূমিকায় মানুষের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন করেছে, লুটপাট করেছে, তাদের আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের আশপাশে দেখতে চাই না। গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে তাদেরকে দেখে আমরা উদ্বিগ্ন, চিন্তিত হই।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালীসহ ১১ জেলায় বন্যায় ইতোমধ্যে কয়েকজন প্রাণ হারিয়েছেন। কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। মানুষের ঘর-বাড়ি পানিতে ভেসে গেছে। আমরা তাদের প্রতি সহমর্মিতা জানাচ্ছি। পাশাপাশি বিএনপি নেতাকর্মীদের তাদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছি।
ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবুলের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আবু ইউসুফ সেলিমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্য সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, জেএসডি সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জহির উদ্দিন স্বপন প্রমুখ।
http://dlvr.it/TCKYXr
0 Comments