ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সুস্বাদু মিষ্টি ছানামুখী ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। বিশেষভাবে তৈরি এই মিষ্টি পণ্যের সুনাম রয়েছে সারা দেশে।
কোনো একটি পণ্য চেনার ক্ষেত্রে জিআই স্বীকৃতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই ছানামুখী জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। সূত্র: ইউএনবি
শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর (ডিপিডিটি) বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
একটি দেশের নির্দিষ্ট ভূখণ্ডের মাটি, পানি, আবহাওয়ার প্রেক্ষাপটে সেখানকার জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি যদি কোনো একটি পণ্য উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, সেটিকে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়। এই স্বীকৃতি দিয়ে থাকে ডিপিডিটি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সাইফুল ইসলাম বলেন, ছানামুখী জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। সরকারিভাবে ব্র্যান্ডিংয়ের আওতায় আনা হয়েছে। জেলার ব্র্যান্ডবুকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ডিপিডিটি ২৪ সেপ্টেম্বর ছানামুখী জিআই পণ্য হিসেবে নিবন্ধিত হওয়ার বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে নিশ্চিত করে। ডিপিডিটিতে ছানামুখী ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) নম্বর ৪১।
যেভাবে তৈরি হয়
ছানামুখীর উৎপত্তি ব্রিটিশ রাজত্বকালে বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। এক কেজি ছানামুখী তৈরিতে গাভির ৭ থেকে ৮ লিটার দুধ লাগে। প্রতি কেজি ছানামুখীর দাম ৭০০ টাকা।
মাতৃভাণ্ডারের দুলাল চন্দ্র পাল বলেন, ৭ থেকে ৮ লিটার দুধের সঙ্গে এক কেজি চিনি দিয়ে তৈরি হয় এক কেজি ছানামুখী। প্রথমে গাভির দুধ জ্বাল দিয়ে এরপর ঠাণ্ডা করে ছানায় পরিণত করতে হবে। পরে ওই ছানাকে কাপড়ে বেঁধে ঝুলিয়ে রাখতে হবে, যাতে সব পানি ঝরে যায়।
এভাবে দীর্ঘক্ষণ ঝুলিয়ে রাখলে ছানা শক্ত হবে। শক্ত ছানাকে ছুরি দিয়ে ছোট ছোট করে কাটতে হবে। এরপর চুলায় একটি কড়াই বসিয়ে তাতে পানি, চিনি ও এলাচ দিয়ে ফুটিয়ে সিরা তৈরি করতে হবে। এরপর ছানার টুকরোগুলো চিনির সিরায় ছেড়ে নাড়তে হবে।
সবশেষে চিনির সিরা থেকে ছানার টুকরোগুলো তুলে একটি বড় পাত্রে রাখতে হবে। পাত্রকে খোলা জায়গা বা পাখার নিচে রেখে নেড়ে শুকাতে হবে। এতেই প্রস্তুত হয়ে যাবে ছানামুখী।
http://dlvr.it/TDpb49
0 Comments