অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তবর্তীকালীন সরকারকে আন্তর্জাতিক সহায়তার পাশাপাশি জনগণের সমর্থন ধরে রাখার জন্য কয়েকটি বিষয়ে দ্রুত সাফল্য অর্জনের দিকে মনোনিবেশ করার আহ্বান জানিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ (আইসিজি)।
যুদ্ধ প্রতিরোধ ও শান্তিপূর্ণ পৃথিবী গড়া নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংস্থাটি শুক্রবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে এমন আহ্বান জানায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ভবিষ্যতের সরকারের ওপর ভারসাম্য ও নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে সংস্কার ছাড়া নির্বাচন আয়োজন করলে আরেকটি স্বৈরাচারী শাসনের উত্থান ঘটতে পারে। সামরিক অভ্যুত্থান হলে তা আরও বড় বিপর্যয় হবে।
ক্রাইসিস গ্রুপের ভাষ্য, দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠান হলে বিএনপির ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা রয়েছে। দলের রেকর্ড বিবেচনায়, এটি আওয়ামী লীগ থেকে খুবই সামান্য ভালো হতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, যদি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে খারাপ হয়ে পড়ে, তাহলে সেনাবাহিনী হস্তক্ষেপ করতে পারে। এর ফলে সামরিক শাসনের একটি নতুন যুগ শুরু হতে পারে।
দ্রুত সাফল্যের মধ্যে জনসেবায় ছোটখাট দুর্নীতি মোকাবিলা, বিদ্যুৎ সরবরাহ উন্নত করা এবং উচ্চ মূল্য হ্রাস করার পদক্ষেপ অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
এতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক ভূমিকা পালনকারী দেশগুলোকে অন্তবর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করে তার উচ্চাকাঙ্ক্ষী লক্ষ্যগুলো সমর্থন করতে এবং বাংলাদেশের রাজনীতিকে নতুন যুগে প্রবাহিত করতে সাহায্য করতে হবে।
আ নিউ এরা ইন বাংলাদেশ? দ্য ফার্স্ট হানড্রেড ডেজ অব রিফর্ম শিরোনামের প্রতিবেদনে ক্রাইসিস গ্রুপের মিয়ানমার ও বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ পরামর্শদাতা থমাস কিন বলেন, অন্তবর্তীকালীন সরকারকে তার দৈনন্দিন শাসন পরিচালনায় উন্নতি করতে হবে, যাতে তা জনগণের ব্যাপক সমর্থন ধরে রাখতে পারে।
প্রতিবেদন সম্পর্কে তিনি বলেন, ইউনূস ও তার দল ব্যর্থ হলে দেশটি আবার এমন একটি নির্বাচিত সরকারের দিকে ফিরে যাবে, যাদের ক্ষমতার ওপর নিয়ন্ত্রণ খুব কম থাকবে। এমনকি সামরিক শাসনের যুগেও প্রবেশ করতে পারে।
কিন বলেন, তবে যদি তারা সংস্কার করতে সক্ষম হন, তবে আগামী কয়েক দশকের জন্য বাংলাদেশের জনগণের উপকার হবে।
তিনি আরও বলেন, অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ গ্রহণের ১০০ দিন পর দেশ গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে।
সরকারের করণীয় নিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, জনসমর্থন বজায় রাখতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের লক্ষ্য হওয়া উচিত আরও উচ্চাভিলাষী সংস্কারের জন্য জন্য দ্রুত সাফল্য অর্জন।
এতে বলা হয়, দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা এড়িয়ে চলতে হবে এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নতুন পদক্ষেপের বিষয়ে ঐকমত্য গড়ে তুলতে হবে।
http://dlvr.it/TGBjmR
0 Comments