Ticker

6/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

Responsive Advertisement

অঝোর ধারার বৃষ্টিতে রাজধানীর জলাবদ্ধতা দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে

টানা বৃষ্টিতে রাজধানীর অধিকাংশ এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। নগরীর গুরুত্বপূর্ণ কিছু সড়ক মোড়ে পানি জমেছে হাঁটু থেকে কোমর পর্যন্ত। ফলে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে ভোগান্তিতে পড়েছে মানুষ। বিরামহীন বৃষ্টি ঝরতে থাকায় নগরের সড়ক থেকে পানি নামার ফুরসত পাচ্ছে না। ফলে সৃষ্টি হয়েছে দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতা।
ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সোমবার ভোররাত থেকে বিরতিহীন বৃষ্টি ঝরছে রাজধানীতে। ডুবে গেছে নগরীর বহু সড়ক ও অলি-গলি। বৃষ্টি আর জলাবদ্ধতায় ভোগান্তিতে পড়েন নগরবাসী। অনেক এলাকায় বাসাবাড়ি ও দোকানে পানি ঢুকে পড়েছে। রাতেও সেই ভোগান্তি পিছু ছাড়েনি। কারণ বৃষ্টি ঝরেই চলেছে।
আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, গত চব্বিশ ঘণ্টায় রাজধানীতে ১১৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

রাজধানী ঢাকায় অঝোর ধারার বৃষ্টি। ছবি: নিউজবাংলা

রাজধানীর ধানমন্ডি ২৭, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ, গ্রিন রোড, শান্তিনগর, মলিবাগ মোড়, নিউমার্কেট, পলাশী, আজিমপুর, লালবাগ, হাজারীবাগ, জিগাতলা, সায়েদাবাদ, শনির আখড়া, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, মিরপুর ১০, ১৩ ও ১৪ নম্বর, বংশাল, নাজিমুদ্দিন রোড, আগারগাঁও থেকে জাহাঙ্গীর গেট যেতে নতুন রাস্তা, খামারবাড়ি থেকে ফার্মগেট, ফার্মগেট-তেজগাঁও ট্রাক স্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকা, মোহাম্মদপুরের কিছু অংশ, মেরুল বাড্ডা, ডিআইটি প্রজেক্ট এলাকা, মোহাম্মদপুর, ইসিবি, গুলশান লেকপাড় এলাকার সংযোগ সড়ক এবং এসব সড়কের আশপাশের অলি-গলিতে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে।
রাস্তাঘাটে পানি জমায় সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নানামুখী বিড়ম্বনায় পড়েছেন কাজের উদ্দেশ্যে বের হওয়া নগরবাসী। অনেক এলাকায় জলাবদ্ধতার কারণে রিকশা-ভ্যান দিয়ে সড়ক পারাপার হতে দেখা গেছে মানুষজনকে।
স্থানে স্থানে জলাবদ্ধ সড়কে সিএনজিচালিত অটোরিকশা বন্ধ হয়ে আছে।
সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ধানমন্ডি ২৭ নম্বর মোড়ে বেশ কয়েকটি প্রাইভেট গাড়ি আটকে থাকতে দেখা যায়।
রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় দেখা যায়, বৃষ্টিতে অনেক দোকানপাট বন্ধ। মার্কেটের যেসব দোকান খোলা সেগুলোতেও ক্রেতা নেই। অলস সময় পার করছেন বিক্রেতারা।
নিউমার্কেট সংলগ্ন নূরজাহান মার্কেট ও ধানমণ্ডি হকার্স মার্কেটের সামনে পানি জমে আছে। চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটের সামনের সড়ক, নিউমার্কেট কাঁচাবাজার সড়কও জলাবদ্ধ। বাজার করতে আসা সাধারণ মানুষকে পানি মাড়িয়ে ভোগান্তি মাথায় নিয়ে চলতে হয়।
এদিকে অঝোর বৃষ্টিতে মিরপুরের শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া, মিরপুর-১০ নম্বর এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা বেসরকারি চাকরিজীবী সুমাইয়া আফরিন বলেন, কোমর সমান উচ্চতার পানি জমেছে রাস্তায়। হাতে গোনো কিছু বাস ছাড়া অন্য কোনো যানবাহন চলাচল করছে না।
এদিকে রাস্তায় জমে থাকা পানি সরাতে কাজ করছেন সিটি করপোরেশনের কর্মীরা। বিশেষ করে কাজীপাড়ার মেট্রো রেলের নিচে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। সেই পানি বের করার জন্য চেষ্টা করছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) কুইক রেসপন্স টিম। মিরপুর ৬০ ফিট সড়কেও পানি জমে থাকতে দেখা গেছে।
গুলশানের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী আহমেদ হোসেন বলেন, আমার বাসা মোহাম্মদপুরে। সকালে অফিসে আসার সময় ভোগান্তিতে পড়েছিলাম। বৃষ্টির কারণে অনেক রাস্তায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। সেটা এখন আরও বেড়েছে। অফিস থেকে বের হয়ে রাস্তায় আটকে আছি। কোনো যানবাহন পাচ্ছি না। জানি না শেষ পর্যন্ত কিভাবে বাসায় পৌঁছব।
বৃষ্টি আর জলাবদ্ধতায় ভোগান্তিতে পড়েছেন প্রয়োজনে কাজে বের হওয়া এমন বহু মানুষ। মূল সড়ক ছাড়া অলিগলিতেও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় চলাফেরা করা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। গণপরিবহনে উঠতে পোহাতে হচ্ছে তীব্র ভোগান্তি। গণপরিবহন বলতে দুই-একটি যা মিলছে তা কেবলই বাস।

সিটি করপোরেশনের তৎপরতা
এদিকে কোথাও জলাবদ্ধতা হলে বা পানি জমে থাকলে হটলাইনে যোগাযোগ করার (১৬১০৬) আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন
জলাবদ্ধতা যেন স্থায়ী না হয় সেজন্য ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) কুইক রেসপন্স টিম কাজ করছে।
ডিএনসিসির মুখপাত্র মকবুল হোসাইন জানান, আওতাধীন ১০ জোনের জন্য ১০টি কুইক রেসপন্স টিম ঠিক করা আছে। জলাবদ্ধতা যেন স্থায়ী না হয় সে লক্ষ্যে তারা কাজ করছে। জরুরি সেবা ১৬১০৬ নম্বরেও রাজধানীবাসীর ফোন আসামাত্র টিম ছুটে যাচ্ছে।
জলাবদ্ধতা নিরসনে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনও (ডিএসসিসি)। এছাড়াও করপোরেশনের আওতাধীন এলাকায় বৃষ্টিপাতজনিত জলাবদ্ধতা নিরসনে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে ৯১টি দল। এসব দলে ৫ জন করে কর্মী রয়েছেন।
সোমবার বিকেলে ডিএসসিসির জনসংযোগ বিভাগ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে বৃষ্টিপাতের ফলে করপোরেশনের আওতাধীন এলাকায় কোথাও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হলে সম্মানিত নগরবাসীকে ০১৭০৯৯০০৮৮৮ নম্বরে ফোন করার অনুরোধ করা হলো। নগরবাসীর এ সংক্রান্ত ফোন পেলে করপোরেশন থেকে দ্রুততম সময়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অন্যদিকে মাঠ পর্যায়ে করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের ৮০টি এবং প্রকৌশল বিভাগের ১১টি দল কাজ করছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ থেকে প্রতিটি ওয়ার্ড একটি করে এবং কয়েকটি ওয়ার্ডে ২/৩টি করে দল কাজ করছে। পাশাপাশি করপোরেশনের ১০টি অঞ্চলে প্রকৌশল বিভাগ থেকে ১১টি দল কাজ করছে।


http://dlvr.it/T7SXCJ

Post a Comment

0 Comments