নেত্রকোণার মোহনগঞ্জে এক গৃহবধূকে যৌতুকের দাবিতে হাত-মুখ বেঁধে মারধর ও গরম খুন্তি দিয়ে ছ্যাঁকা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়িসহ বাড়ির লোকজন মিলে সম্প্রতি তার ওপর এমন নির্যাতন করেন বলে অভিযোগ করেছেন ওই গৃহবধূ। তাকে মোহনগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বাদী হয়ে স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়িসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে থানায় বুধবার মামলা করেন।
২২ বছর বয়সী ওই গৃহবধূ মোহনগঞ্জ উপজেলার জয়পুর গ্রামের মো. সাকিব মিয়ার স্ত্রী। তাদের ৯ মাস বয়সী একটি ছেলে রয়েছে।
মোহনগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. দেলোয়ার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, গৃহবধূর শরীরে মারধরের একাধিক চিহ্ন রয়েছে। তাই অভিযোগটি আমলে নিয়ে থানায় মামলা রেকর্ড করা হয়। পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের জন্য।
মামলার আসামিরা হলেন গৃহবধূর স্বামী মো. সাকিব মিয়া (২৬), তার দুই বোন মোসা. সুমা আক্তার (৩০), মোসা. রুমা আক্তার ( ২৮), শ্বশুর মো. খোকন মিয়া (৫০) ও শাশুড়ি মোসা. তহুরা আক্তার (৪৮)। মামলার অভিযোগ, পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, সাকিব মিয়ার সাথে দুই বছর আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় ওই নারীর। বিয়ের পর থেকেই বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দেয়ার জন্য চাপ দিতে থাকেন সাকিব।
অভিযোগ, টাকা এনে দিতে রাজি না হওয়ায় শুক্রবার সন্ধ্যায় সাকিব, তার বাবা-মা ও দুই বোন মিলে ওই নারীকে হাত-মুখ বেঁধে পেটাতে থাকেন। এক পর্যায়ে রান্না ঘরে থাকা খুন্তি গরম করে তা পিঠে ছ্যাঁকা দেয়া হয়। চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা গিয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
ভুক্তভোগীর বাবা বলেন, আমি গরিব মানুষ। কোনো রকম কাজকর্ম করে সংসার চালাই। মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি দুই বছর হয়েছে। বিয়ের সময় দুই-তিন লাখ টাকা খরচ করে জিনিসপত্র দিয়েছি। মেয়েকে টাকার জন্য স্বামীসহ পরিবারের লোকজন অত্যাচার করে। তাই বিয়ের পরের বছর জমি বিক্রি করে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছি। এখন আবার টাকার জন্য অত্যাচার শুরু করেছে।
মোহনগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার মো. রফিকুল ইসলাম জানান, ওই নারীর শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাকে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
অভিযুক্ত সাকিব ও তার বাবা মায়ের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি। তাই তাদের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
http://dlvr.it/T7vT5M
0 Comments