ভালোবাসার টানে বনলতা সেনের শহর নাটোরের প্রত্যন্ত গ্রামে সুদূর চীন থেকে ছুটে এসেছেন লি সি জাং নামে এক যুবক। ইতোমধ্যে তার ছয় মাসের প্রেম পূর্ণতা পেয়েছে বিয়ের মধ্য দিয়ে।
গত বুধবার সদর উপজেলার বড়বাড়িয়া গ্রামে আবু তাহেরের বাড়িতে আসেন তিনি। পরে ধর্মান্তরিত হয়ে বৃহস্পতিবার নাটোর নাটোরের নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের তৃতীয় বর্ষে অধ্যায়নরত ছাত্রী ফাতেমা খাতুনকে বিয়ে করেন তিনি। নবদম্পতিকে একনজর দেখতে ভিড় করছেন স্থানীয়রা।
ফাতেমার পরিবার ও স্থানীয়রা জানায়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উই চ্যাটের মাধ্যমে প্রায় ছয় মাস আগে চীনের সাংহাইয়ের বাসিন্দা প্লাস্টিক সার্জন লি সি জাংয়ের সঙ্গে পরিচয় হয় নাটোরের প্রত্যন্ত গ্রাম বড়বাড়িয়ার ফাতেমা খাতুনের। লি সি জাংয়ের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমেই চীনা ভাষা রপ্ত করেন ফাতেমা।
ভালোবাসার আদান প্রদানের একপর্যায়ে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন দুই প্রেমিক যুগল। সেই সিদ্ধান্ত মোতাবেক গত বুধবার বিকেলে ফাতেমার গ্রামে হাজির হন লি সি জাং। তারপর দুই পরিবারের সম্মতিক্রমেই শুক্রবারে সাত লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন তারা।
পরিবার জানায়, বিয়ের আগেই আগেই বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী লি সি জাং ধর্ম পাল্টে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তার বর্তমান নাম আলি। বাংলাদেশে এসে ভালো লাগার কথা জানান আলি। ভালোবাসার মানুষকে আপন করে পেয়ে উচ্ছ্বাসিত দুজনই।
লি সি জাং ওরফে আলি বলেন, তিনি চায়না থেকে নাটোরে এসেছেন তার ভালোবাসার স্বীকৃতি পেতে। তিনি তার স্ত্রীকে খুব ভালোবাসেন। তার জন্য ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। তার নতুন নাম আলি। তিনি চান তার ভালোবাসার গল্প সবাই জানুক। সবার কাছে দোয়া চান আলি।
ফাতেমা খাতুন জানান, তাকে ভালোবেসে লি সি জাং বনলতা সেনের শহর নাটোরে এসেছেন। তিনিই লি সি জাংয়ের বনলতা। ভালোবাসার জন্য তিনি বৌদ্ধ ধর্ম ত্যাগ করে মুসলমান হয়েছেন। সুখ-দুঃখে একসঙ্গে থাকতে সবার দোয়া চেয়ে স্বামীর সঙ্গে চীনে চলে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন ফাতেমা।
ফাতেমার বাবা আবু তাহের জানান, তার মেয়ে সামাজিক যোগাযোগেরমাধ্যমে চীনের তরুণের সঙ্গে পরিচয়ের সূত্র ধরে ভালোবাসায় জড়িয়ে পড়েন। পরে চীনের ওই তরুণ তার বাড়িতে চলে আসেন। পরে তার মেয়ের সঙ্গে বিয়ে হয় তার।
লক্ষ্মীপুর খোলাবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান কালু জানান, বিদেশ থেকে অনেকে এসে বাংলাদেশে বিয়ে করছেন। দেশের বিভিন্ন স্থানে এমন ঘটনা ঘটলেও এই প্রথমবারের মতো চীনের বাসিন্দা ভালোবাসার টানে নাটোরে এই প্রত্যন্ত গ্রামে ছুটে এসেছেন। তাদের জীবন সুখের হোক এমনটাই প্রত্যাশা করেন তিনি।
ফাতেমার স্বজনদের অনেকেই জানান, বাংলা ভাষা বুঝতে অসুবিধা হওয়ায় তারা ট্রান্সলেটর অ্যাপ ব্যবহার করে কথোপকথন চালিয়ে যাচ্ছেন আলির সঙ্গে।
http://dlvr.it/T8f4jH
0 Comments