রাষ্ট্রীয় সব সংবাদমাধ্যমের স্বায়ত্তশাসন, সাংবাদিক ও সংবাদমাধ্যম নিয়ে নিপীড়নমূলক আইন প্রত্যাহার এবং সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হয়রানির মামলা বন্ধসহ প্রধান উপদেষ্টার কাছে একগুচ্ছ সংস্কার প্রস্তাব তুলে ধরেছেন বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদকরা।
প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় মঙ্গলবার এক বৈঠকে এসব দাবি জানান তারা।
বৈঠক শেষে তাদের দাবি-দাওয়ার বিষয়টি গণমাধ্যমের সামনে তুলে ধরেন ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আলম।
এর আগে মাহফুজ আনাম, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানসহ দৈনিক পত্রিকার সম্পাদকদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা দেড় ঘণ্টা বৈঠক করেন।
বৈঠকে আলোচনার বিষয়ে মাহফুজ আনাম বলেন, বিটিভি, বিএসএস এবং রেডিও, যেগুলো সরকারের নিয়ন্ত্রণে সেগুলোকে স্বায়ত্তশাসন দেওয়ার দাবি জানিয়েছি। তারা যেন পেশাগতভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারে। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, সারা বিশ্ব বাংলাদেশের দিকে তাকিয়ে আছে। তারা উৎসুক বাংলাদেশকে সহায়তা করতে।
ডেইলি স্টার সম্পাদক বলেন, আমরা কতগুলো গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার আশা করছি। সেই সংস্কারের মধ্যে সংবিধান পরিবর্তন, স্থানীয় সরকার শক্তিশালী করা, বিভিন্ন স্বায়ত্তশাসিত সংস্থাগুলো, অ্যান্টি করাপশন কমিশন, হিউম্যান রাইটস কমিশন, নির্বাচন কমিশন এগুলোকে সংস্কার করা।
সত্যিকার অর্থে গণমুখী সংস্থা আমরা চাই। নির্বাচন কমিশন যাতে ভবিষ্যতে ভোটারদের চিন্তার প্রতিফলন ঘটান, এ রকম একটা সংস্থা চাই। আমরা এমন দুর্নীতি দমন কমিশন চাই, তারা যেন স্বাধীনভাবে দেশের দুর্নীতি দমন করতে পারে।
সাংবাদিকতাবিরোধী সব কালাকানুন বাতিলের দাবি করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন, সাইবার সিকিউরিটি আইনের মধ্যে সাংবাদিক নিপীড়নের যে অধ্যায়গুলো আছে, সেগুলো কার্যকর হবে না, এমনটা যাতে ঘোষণা করা হয়। এটা সংস্কারের জন্য উনারা সময় নিয়ে করতে পারেন।
তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) সম্পূর্ণরূপে স্বাধীন সাংবাদিকতা বিশ্বাস করেন। আমাদেরকে যে বিশেষ আবেদন করেছেন, আমরা যেন আমাদের লেখনীর মাধ্যমে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা, এ সরকারের ভুল-ত্রুটি সোচ্চারভাবে, নির্দ্বিধায় সেটা যেন কাগজে ছাপি। এই সরকারকে সাহায্য করি।
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রসঙ্গে মাহফুজ আনাম বলেন, প্রধান উপদেষ্টা সত্যিকার অর্থে মিডিয়ার স্বাধীনতা বিশ্বাস করেন। মিডিয়াবান্ধব যদি কোনো সরকারপ্রধান আমরা পেয়ে থাকি, তাহলে আমরা এখন পেয়েছি। আমরা এর জন্য অত্যন্ত আনন্দিত।
সংবিধান সংশোধনের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা যদি মনে করেন যে, একটা গ্রুপ করে দেয়া বা একটা বিশেষ কমিটি করে দিয়ে সব ধরনের আইনের যে পরিবর্তন করা হয়। আমরাও সংবিধান সংস্কার চাই। আমরা গণতান্ত্রিক রিফর্ম চাই।
সাংবাদিকদের নিরাপত্তার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন যে, এগুলো তার সরকারের কোনো পলিসিগত কিছু না।
মাহফুজ আনাম বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার কতদিন থাকবে সেটা সম্পাদকদের কাছে জিজ্ঞেস করেছেন ডক্টর মোহাম্মদ ইউনুস। সে বিষয়ে অনেকে মতামত দিয়েছেন, তবে এই সরকারের মূল এজেন্ডা কী, সেটার অনুপাতে সময়।
দুই, তিন, পাঁচ বছর। উনার নিজস্ব কোনো চিন্তা নেই। জাতি কী চায়, জনতা কী চিন্তা করছেন, সেটা তিনি জানতে চান। তিনি মিডিয়াকে আহ্বান করেছেন আমরা যেন জনগণের কথা লিখি।
http://dlvr.it/TClQlN
0 Comments