Ticker

6/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

Responsive Advertisement

শিল্প-কারখানায় পুনরায় গ্যাস সংযোগ চালুর চিন্তা-ভাবনা

শিল্পপ্রতিষ্ঠানের চাকা সচল রাখতে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে শিল্প-কারখানায় পুনরায় গ্যাস সংযোগ শুরুর চিন্তা-ভাবনা করছে সরকার। তবে গৃহস্থালির গ্যাস সংযোগের ওপর থেকে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের আপাতত কোনো সম্ভাবনা নেই বলে সরকারি সূত্রে জানা গেছে।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন পিএলসিতে প্রায় ৪৬ হাজার গৃহস্থালির গ্যাস সংযোগের আবেদন ঝুলে আছে।
শিল্পভিত্তিক গ্রাহক এবং ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য গ্যাস সংযোগের আবেদনের সংখ্যা ৩৬৮টি।
২০১০ সালে গৃহস্থালি গ্রাহকদের জন্য নতুন গ্যাস সংযোগের ওপর স্থগিতাদেশ জারি করেছিল সরকার। ২০১৩ সালে অল্প সময়ের জন্য তা প্রত্যাহার করা হলেও ২০১৪ সালের প্রথম দিকে আবার স্থগিত করা হয়। এরপর থেকে গৃহস্থালি পর্যায়ে গ্রাহকদের নতুন করে গ্যাস সংযোগ দেয়া হচ্ছে না।
তিতাস গ্যাসের কর্মকর্তারা জানান, ২০২১ সালের এপ্রিল থেকে অর্থনৈতিক অঞ্চল ও শিল্প পার্কের বাইরের শিল্পপ্রতিষ্ঠানে নতুন গ্যাস সংযোগ দেয়া বন্ধ করতে ২০২০ সালে একটি পরিপত্র জারি করে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ।
নতুন সংযোগের বিষয়ে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্রনাথ সরকার বলেন, পেট্রোবাংলা শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোতে নতুন করে গ্যাস সংযোগ দেয়ার কথা ভাবছে।
সম্প্রতি জ্বালানি বিটের সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি বলেন, অর্থনৈতিক দিক বিবেচনায় গ্যাস সংযোগ পাওয়ার ক্ষেত্রে শিল্পপ্রতিষ্ঠান সব সময় অগ্রাধিকার পায়। জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগকে আমাদের ইতিবাচক মতামত জানিয়েছি। এখন মন্ত্রণালয় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
তবে গৃহস্থালি গ্রাহকদের জন্য নতুন করে গ্যাস সংযোগ চালুর বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান তিনি। বলেন, এটি সম্পূর্ণরূপে মন্ত্রণালয়ের বিষয় এবং এখন পর্যন্ত এ জাতীয় সংযোগ দেয়ার কোনো সিদ্ধান্ত মন্ত্রণালয়ের নেই।
জ্বালানি উপদেষ্টার সাম্প্রতিক বক্তব্যের উল্লেখ করে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান বলেন, মন্ত্রণালয় খুব স্পষ্ট করেই বলেছে, শিগগির নতুন কোনো গৃহস্থালি গ্যাস সংযোগ দেয়া হবে না।
পেট্রোবাংলার পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মাইনস) ইঞ্জিনিয়ার মো. কামরুজ্জামান খান বলেন, বর্তমানে গ্যাসের সরবরাহ ও চাহিদার মধ্যে বিশাল ব্যবধান রয়েছে, যা নতুন গ্যাস সংযোগ দেয়ার ক্ষেত্রে বড় অন্তরায়। পেট্রোবাংলা প্রায় চার হাজার এমএমসিএফডি চাহিদার বিপরীতে প্রায় তিন হাজার একশ এমএমসিএফডি গ্যাস উৎপাদন ও সরবরাহ করে।
তিতাস ও অন্যান্য বিতরণ কোম্পানির অনেক কর্মকর্তা জানান, সরকার পাইপবিহীন গ্যাস, বিশেষ করে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) ব্যবহারে উৎসাহিত করছে; যেখানে ইতোমধ্যে ব্যবসায়ী গোষ্ঠীগুলোর একটি অংশ একশ কোটি ডলারের বেশি বিনিয়োগ করেছে।
তিতাসের এক কর্মকর্তা জানান, বিশাল এলপিজি বাজার দেশের শহর থেকে গ্রামাঞ্চলে বিস্তৃত হয়েছে। মানুষ রান্নার উদ্দেশ্যে পরিচ্ছন্ন জ্বালানি হিসেবে এই গ্যাস ব্যবহারের প্রতি অভ্যস্ত হয়ে উঠছে। সরকার এই বাজারে হস্তক্ষেপ করতে চায় না।
খাত-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে বর্তমানে বছরে প্রায় ১৫ লাখ টন এলপিজি আমদানি করা হচ্ছে।
অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, ২০৩০ সালের মধ্যে এলপিজির বাজার ৩০ লাখ টনে উন্নীত হবে।
এ পর্যন্ত সরকার এলপিজি ব্যবসা পরিচালনার জন্য ৫৮টি প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স দিয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ২৮টি চালু রয়েছে। ২০২২ সালে এই খাত থেকে ৬৫০ কোটি টাকা মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) এবং আরও ২০০ কোটি টাকা আয়কর পেয়েছে সরকার।
পেট্রোবাংলার আরেক কর্মকর্তা বলেন, অনেক বিষয় বিবেচনা করে সরকার আবারও পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্যাস সংযোগ চালু করতে চায় না। সরকার নতুন করে গৃহস্থালি গ্যাস সংযোগ চালু করলে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে।
তিনি বলেন, নতুন সংযোগের পরিবর্তে সরকার বরং বিভিন্ন পদক্ষেপের মাধ্যমে অবৈধ সংযোগের বিস্তার রোধ করতে চায়।
বাংলাদেশে বর্তমানে ২৯টি গ্যাসক্ষেত্র রয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ২২টি সক্রিয়ভাবে কাজ করছে।


http://dlvr.it/TFpr9q

Post a Comment

0 Comments